অর্ণব আইচ: এবার শহরে গ্রেপ্তার জাল ভিসা (Fake Visa) চক্রের চাঁই। দিল্লি এবং হরিদেবপুর থানার পুলিশের যৌথ অভিযানে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃত নন্দকিশোর প্রসাদকে শনিবারই ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হবে। তাকে জেরা করে জাল ভিসা চক্র সম্পর্কিত আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলেই আশা তদন্তকারীদের।
দিল্লির (Delhi) চাণক্যপুরী থানায় দায়ের হওয়া এক অভিযোগের ভিত্তিতে নন্দকিশোর প্রসাদ নামে ওই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কয়েক মাস আগে রাশিয়ায় চাকরি করতে যাওয়ার সুযোগ পান সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ওমপ্রকাশ নামে এক যুবক। ভিসার জন্য দূতাবাসে গিয়ে যোগাযোগ করেন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে তা পাননি তিনি। ভিসা তৈরি করতে না পারলে চাকরি টিকবে না, ভেবেই আকূল হয়ে ওঠেন ওমপ্রকাশ। ইতিমধ্যেই সঞ্জীব অরোরা নামে এক ব্যক্তির সন্ধান পান ওমপ্রকাশ। সঞ্জীব ৬৫ হাজার টাকার বিনিময় ভিসা তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর জাল ভিসার স্ক্যানড কপি ওমপ্রকাশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাশিয়ার পাড়ি দেওয়ার আগেরদিন ভিসা দিয়ে দেওয়া হবে বলেই জানায় সঞ্জীব। তবে সেদিনও হাতে ভিসা না পাওয়ায় সন্দেহ হয় ওমপ্রকাশের। দূতাবাসে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে বুঝতে পারেন প্রতারণা চক্রের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছেন তিনি। এরপরই দিল্লির চাণক্যপুরী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবক।
[আরও পড়ুন: তিরবিদ্ধ অবস্থায় বাঁকুড়া থেকে কলকাতায়, প্রৌঢ়কে নতুন জীবন ফিরিয়ে নজির SSKM-এর]
ওমপ্রকাশের অভিযোগের ভিত্তিতে অশ্বিনীকুমার সিং এবং কুণাল ঝাঁ-সহ মোট তিন পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। দিনকয়েক আগে মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে সঞ্জীব অরোরাকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি ও জেলা পুলিশের যৌথ দল। তাকে দিল্লিতে নিয়ে জেরা করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদেই নন্দকুমার প্রসাদের নাম সামনে আসে। তার খোঁজ শুরু হয়। এরপর দিল্লি পুলিশ জানতে পারে হরিদেবপুর (Haridevpur) থানা এলাকার এমজি রোডে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে নন্দকিশোর। এরপর দিল্লি পুলিশ হরিদেবপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। শুক্রবার রাতে ওই ফ্ল্যাটে যৌথ অভিযান চালানো হয়। হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় নন্দকিশোরকে। তার কাছ থেকে মোট ৮২টি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। তার মধ্যে ১০টি নেপালের। এছাড়াও ল্যাপটপ, প্রিন্টার, টাকা গোনার যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, মাত্র দেড় বছর আগে বিয়ে করেছিল নন্দকিশোর। তবে স্বামী যে জাল ভিসা চক্রের চাঁই, সে বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা ছিল না বলেই দাবি নন্দকিশোরের স্ত্রীর।