বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ‘খিড়কি থেকে সিংহ দুয়ার/ এই তোমাদের পৃথিবী। এর বাইরেও জগত আছে, তোমরা জানো না।’
সিপিএম (CPM) শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে গিয়ে সম্মেলনের মঞ্চেই গলা ছাড়লেন এক প্রতিনিধি। বক্তার আগ্রাসী বক্তব্য শুনে হাততালির রোলও উঠল সম্মেলন মঞ্চে। এইভাবেই কার্যত মেছো হাটে পরিণত হল সিপিএমের কলকাতা (Kolkata) জেলা সম্মেলনের প্রথম দিন। অভিযোগ একটাই, শীর্ষনেতারা শুধু বাড়ি থেকে পার্টি অফিস। আর পার্টি অফিস থেকে বাড়ি করছেন। সংগঠনের ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন নিচুতলার কর্মীদের উপর। কমরেডকুলের মাথাদের বিরুদ্ধে সম্মেলনে এভাবেই তোপ দাগলেন প্রতিনিধিরা।
[আরও পড়ুন: ‘নিজেদের চেষ্টায় ফিরেছি’, মন্ত্রীর অনুরোধেও ‘মোদি জিন্দাবাদ’ বলতে নারাজ ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা]
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্মেলন। প্রথম দিন পার্টির রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Basu)। এই পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু সম্মেলন যত এগিয়েছে প্রতিনিধিদের একের পর এক বাক্যবাণ ধেয়ে আসতে থাকে নেতাদের দিকে।
বক্তব্য শুনে হতভম্ব হয়ে যান বিমান বসুর মতো শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দলিলের উপর আলোচনা করতে গিয়ে জোট নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বকে কার্যত কাঠগড়ায় দাঁড় করান প্রতিনিধিরা। নিচুতলার নেতৃত্বের সঙ্গে কথা না বলেই জোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অথচ দায় চাপিয়ে দেওয়া হয় তাঁদেরই উপর। ওঠে হাজার প্রশ্ন। যেমন, বুথ কমিটি আগের থেকে গঠন করা হয়নি কেন? কেন বুথে পোলিং এজেন্ট ছিল না? কেন পার্টির বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়নি? পার্টিতে ছাত্র, যুব ও মহিলা সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন দুর্বলতা রইল, তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলেন নেতারা।
[আরও পড়ুন: নোনাপুকুরে চলন্ত ট্রামে দাউদাউ করে জ্বলে উঠল আগুন, আতঙ্কে হুড়োহুড়ি যাত্রীদের]
কিন্তু সমস্যা কোথায় হচ্ছে, এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কখনওই নেতৃত্ব রাস্তায় নামেন না। সবসময় দায় চাপিয়ে দেওয়া হয় নিচুতলার নেতাকর্মীদের উপর। নেতৃত্বের এই মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। জেলা সম্মেলনের প্রথম দিনই এই দাবি তোলেন প্রতিনিধিরা।