শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: অ্যাম্বুল্যান্স চালক সংগঠনের অভিযোগের জের। শবদেহ কাণ্ডে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস। তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ধৃত অঙ্কুরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন অ্যাম্বুল্যান্স চালক সংগঠন।
ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। ওইদিন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বাইরে দেখা গিয়েছিল মর্মান্তিক দৃশ্য। মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন ক্রান্তির এক পরিবার। যদিও হাসপাতাল থেকে কিছুদুর যাবার পরই অঙ্কুর দাস নামে ওই যুবক এগিয়ে যান। অ্যাম্বুল্যান্সে করে মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক সংগঠন।
[আরও পড়ুন: আবাস ‘দুর্নীতি’ নিয়ে মুখ খোলায় ‘খুনে’র হুমকি! আতঙ্কে চরম সিদ্ধান্ত পঞ্চায়েত সদস্যের]
তাঁদের অভিযোগ, গোটা ঘটনা সাজানো এবং উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। সরকারকে বদনাম করতে মৃতের পরিবারকে ব্যবহার করে গোটা ঘটনা সাজিয়েছিলেন অঙ্কুর। তাঁদের যুক্তি, হাসপাতাল থেকে তিনশো মিটার দূরে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন অঙ্কুর। সামান্য কিছুটা পথ মৃতদেহ ঘাড়ে করে নিয়ে যেতে বাধ্য করেন। উদ্দেশ্য ছিল সেই ছবি ভাইরাল করা। অভিযোগের ভিত্তিতে অঙ্কুরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনায় কয়েকজন সাংবাদিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আজ অর্থাৎ বুধবার ধৃত অঙ্কুর দাসকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত বুধবার রাতে অসুস্থ স্ত্রী লক্ষ্মীরানি দেওয়ানকে (৭২) মেডিক্যাল কলেজের অধীনে থাকা জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করেন ক্রান্তির বাসিন্দা জয়কৃষ্ণ দেওয়ান। বৃহস্পতিবার ভোররাতে মৃত্যু হয় লক্ষ্মীরানির। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য ছেলে রামপ্রসাদ দেওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে শববাহী গাড়ির খোঁজ শুরু করেন জয়কৃষ্ণ। হাসপাতালের বাইরে গাড়ি পেয়েও যান তাঁরা। কিন্তু মৃতদেহ পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে ৩ হাজার টাকা ভাড়া চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। জয়কৃষ্ণবাবু জানান, তাঁদের কাছে মাত্র ১২০০ টাকাই ছিল। অসুস্থ স্ত্রীকে বাড়ি থেকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পর্যন্ত আনতে ভাড়া দিয়েছিলেন ৯০০ টাকা। এক্ষেত্রে ১২০০ টাকা পর্যন্ত দিতে রাজি হয়েছিলেন তাঁরা। হাতজোড় পর্যন্ত করেছিলেন, কিন্তু রাজি হননি কেউই।