অর্ণব আইচ: অভিনব প্রতারণা! খাস কলকাতায় সিম দেওয়ার নাম করে মোবাইলের নিয়ন্ত্রণ নিজের দখলে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পরে সেই মোবাইল থেকে তথ্য হাতিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারণা চক্র। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
নিজেকে মোবাইল সংস্থার কর্মচারী পরিচয় দিয়ে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ব কলকাতার আনন্দপুর এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তির কাছে ফোন আসে। এক ব্যক্তি নিজেকে ওই মোবাইল সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দেয়। তার পরই সহজে সিম কার্ড দেওয়ার টোপ দেয় সে। তবে সিম নিতে গেলে শুধু আধার কার্ডের কপি ও আর আঙুলের ছাপ পাঠাতে হবে। এতে আনন্দপুর এলাকার বাসিন্দা রাজিও হয়ে যান। একই সঙ্গে তাঁকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে ১০ টাকা অনলাইনে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠাতে বলা হয়। তিনি বুঝতেও পারেননি যে, ওই অ্যাপটি আসলে ‘মিরর অ্যাপ’ (Mirror App)।
[আরও পড়ুন: কোভিডের ঠেলায় পর্যটনে মন্দা, চাকরি খোয়াচ্ছেন IRCTC’র ৪০০ কর্মী]
বৃদ্ধ ওই অ্যাপ ডাউনলোড করার পরই তাঁর মোবাইল ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় ওই ব্যাংক জালিয়াত। ফলে কী ওটিপি আসছে, তাও অতি সহজে জেনে যায় সে। তার মাধ্যমে দু’দফায় ৮১ হাজার ৪০ টাকা ও ৯৯ হাজার ২৭৪ টাকা তুলে নেয় ব্যাংক জালিয়াতরা। জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ওই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বৃদ্ধ এই ব্যাপারে আনন্দপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, জিনিস সরবরাহের নাম করে ৪১ লাখ টাকার প্রতারণা। এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার বাইপাসের ধারের একটি নামী হোটেলের সামনে থেকে তঁাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যবসায়ীর নাম লক্ষ্মণ আগরওয়াল। গত বছরই ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ হয় মধ্য কলকাতার জোড়াসাঁকো এলাকার অন্য এক ব্যবসায়ীর। অভিযোগকারী জোড়াসাঁকো থানায় অভিযোগ জানান, লক্ষ্মণ আগরওয়াল ওই ব্যবসায়ীকে বলেন, তিনি আমদানিকৃত কিছু জিনিস তাঁকে সরবরাহ করবেন। এতে ওই ব্যবসায়ী রাজি হয়ে যান। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে অভিযোগকারী ৪১ লক্ষ টাকা আগাম দেন। কিন্তু ওই টাকা নেওয়ার পর আর জিনিস অভিযুক্ত সরবরাহ করেননি। অভিযোগকারী ব্যবসায়ী তাঁকে টাকা ফেরত দিতে বলেন। কিন্তু সেই টাকাও তিনি ফেরত দেননি। এর পরই অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জোড়াসাঁকো থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
[আরও পড়ুন: ভোটের মাঝে ফের বড়সড় রদবদল, অপসারিত কলকাতার ৮ রিটার্নিং অফিসার]
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের প্রতারণাদমন শাখার আধিকারিকরা। অভিযোগ, পুলিশের চোখ এড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ী। এদিন গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বাইপাসের কাছে একটি নামী হোটেলের সামনে হানা দেন গোয়েন্দারা। সেখানেই আসার কথা ছিল তঁার। ওই জায়গা থেকেই অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এদিন আদালতে তোলা হলে তাঁকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে জেরা করা হচ্ছে।