বাবুল হক, মালদহ: অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের (Rape) অভিযোগ। পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ঘটনা জানাজানি হতেই নয়া বিপত্তি। সালিশি সভা বসিয়ে ঘটনার নিষ্পত্তির কথাও বলা হয়। তবে সে নির্দেশ অমান্য করে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে একঘরে মালদহের (Maldah) হরিশচন্দ্রপুরের নির্যাতিতার পরিবার।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি ওই নাবালিকাকে অভিযুক্ত যুবকের দিদি ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে সেই যুবকের দিদি তাঁর দিদার বাড়ি যাবে বলে বেরিয়ে যায়। সেই সময় অন্য ঘরে ছিল অভিযুক্ত যুবক। সে এসে ওই নাবালিকাকে জোর করে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে ধারাল অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখায়। এবং ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এরপর অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে আসে। ঘটনার কথা জানালে কিশোরীকে খুন করার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ভয়ে কিশোরীর পরিবারও কাউকে কিছু জানায়নি। কিন্তু কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। আর তারপরই বিষয়টি জানাজানি হয়। থানায় অভিযোগ জানানোর উদ্যোগ নেয়। তবে সেই সময় হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁদের। অভিযোগ, গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সালিশি সভা বসায়। বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। অভিযুক্ত যুবককে তারাই গ্রামছাড়া হতে সাহায্য করে বলেও অভিযোগ। নাবালিকার মা তার প্রতিবাদ করতে যান। পালটা হুমকির মুখে পড়তে হয় তাকে। শুধু তাই নয়, গ্রামের মধ্যে একরকম একঘরে করে রাখা হয় তাঁদের। নজর রাখা হয় তাঁরা থানায় অভিযোগ জানাতে যাচ্ছেন কিনা।এরপর গোপনে নির্যাতিতার মা থানায় ছুটে যান। গত রবিবার সন্ধেয় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
[আরও পড়ুন: রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের পর কীটনাশক খাইয়ে খুন কিশোরীকে! চাঞ্চল্য সামশেরগঞ্জে]
এরপরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। যদিও অভিযুক্ত যুবক ততক্ষণে গ্রাম থেকে উধাও হয়ে গেছে। তবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সরব রাজনৈতিক মহল। এ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কিষান কেডিয়া বলেন, “এলাকায় মেয়েদের কোন সুরক্ষা নেই। শাসকদল এখনও ধর্ষণ নিয়ে রাজনীতি করছে। গ্রাম পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ থেকে সবই তৃণমূলের। বিজেপি বাধা দেবে সেই সাহস নেই। নজর এড়াতে বিজেপিকে অযথা টানা হচ্ছে।” জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্বু রহমান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ওই বুথে সকলেই বিজেপি। তৃণমূলের নাম করে বাঁচতে চাইছে। জঘন্য অপরাধ কে তৃণমূল কখনো প্রশ্রয় দেয় না এবং দিবেও না। তৃণমূলের বদনাম করতে এসব ষড়যন্ত্র। এমন ঘটনাকে দল সমর্থন করে না। পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমরা অনুরোধ করব যারা ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হোক।” হরিশচন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, “অভিযুক্ত এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ সমস্ত ঘটনাই খতিয়ে দেখছে।”