শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ফেল করলেই প্রেমে ইতি। প্রেমিকের চরম শর্তপূরণ করতে না পারায় হতাশায় হাতের শিরা কেটে আত্মঘাতী এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে জলপাইগুড়ি শহরের সেনপাড়া এলাকায়। চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি পূর্বাঞ্চল হাইস্কুলের ছাত্রী আশা সাহা। পরিবারের অভিযোগ, পরীক্ষায় পাশ করতে না পারলে সম্পর্ক রাখবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল প্রেমিক। রেজাল্ট জানার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্য মেয়ের ছবিও পোস্ট করেছিল ওই যুবক।
এরপরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ছাত্রী। বৃহস্পতিবার বিকেলে হাতের শিরা কেটে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানান। শুক্রবার বিকেলে জলপাইগুড়ির কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার।
বাবা রিকশাচালক। মা বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করেন। তিন মেয়ের সংসারে আশাই ছিল বড় মেয়ে। পাড়া প্রতিবেশীদের বক্তব্য, পড়াশোনায় খুব একটা খারাপ ছিল না সে। পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় আলাদা করে গৃহশিক্ষক রাখা সম্ভব হয়নি। তবে নিজের চেষ্টায় পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল আশা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেলাকোবার এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক হয় আশার। সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়ে ছিল। মা জ্যোৎস্না সাহার অভিযোগ, যুবক তাঁর মেয়েকে জানিয়েছিল উচ্চমাধ্যমিক পাশ করতেই হবে। না হলে সম্পর্ক রাখবে না। তা নিয়ে মানসিক চাপে ছিল আশা। তাই উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
[আরও পড়ুন: প্রয়াত উত্তম-সুচিত্রার সহ-অভিনেতা অমরনাথ মুখোপাধ্যায়, শোকস্তব্ধ টলিউড]
গত বুধবার ফল ঘোষণার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। মা জোৎস্না সাহার অভিযোগ, এই অবস্থায় মেয়ের পাশে দাঁড়ানোর বদলে ওই যুবক সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্য তরুণীর ছবি পোস্ট করে। মেয়েকে হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। ওই যুবকের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রীর মা। তাঁর বক্তব্য, “আমরা ওই যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান কোতয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার।