সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একশো বছর আগে, ঠিক এই দিনেই মিলেছিল স্বীকৃতি। ‘থিওরি অফ রিলেটিভিটি’ বা ‘আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব’ যে নির্ভুল, সেই বিশ্বাসে সিলমোহর পড়েছিল তখনই। নেপথ্যে ছিলেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানী স্যর আর্থার এডিংটন। পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে তিনিই প্রমাণ করেছিলেন বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী এলবার্ট আইনস্টাইন যা বলেছিলেন, তা একশো শতাংশ সত্য। কিন্তু ঠিক কীভাবে তা করেছিলেন তিনি? কী দেখে, শুনে, বুঝে বা বিশ্লেষণ করে, তিনি ১৯১৯ সালের ২৯ মে ‘থিওরি অফ রিলেটিভিটি’-কে সত্য বলে ঘোষণা করেছিলেন? যার প্রেক্ষিতে দু’বছর পর ১৯২১ সালে নোবেল সম্মান পান, যুগান্তকারী এই তত্ত্বের স্রষ্টা আইনস্টাইন?
[আরও পড়ুন: ফেসবুকে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা? আর সম্ভব নয়]
শতক পেরিয়ে উত্তর মিলল তার। জানা গেল, এর মূলে ছিল একটি সূর্যগ্রহণ। বুঝিয়ে বলা যাক। ১৯১৯ সালের ২৯ মে, স্যর এডিংটন যখন আইনস্টাইনের তত্ত্বকে স্বীকৃতি দেন, তখন তিনি নিজে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছিলেন যে সত্যিই সূর্যগ্রহণের সময় নক্ষত্রদের অবস্থানগত হেরফের ঘটে। তার কারণ, আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনুযায়ী, মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে, সূর্যের মতো বিশালকায় বস্তুর সামনে পড়ে আলোর পথ বেঁকে যায়। ঠিক এই সময়ই সূর্যের আশপাশে থাকা অন্য সব নক্ষত্র থেকে বেরোনো আলোর পথ কিছুটা বেঁকে এসে পৌঁছায়। যেহেতু গোটা ঘটনাটা গ্রহণের সময় ঘটে, তাই এই পরিবর্তন পরিমাপ করা যায়। আর তা করেই স্যর এডিংটন, আইনস্টাইনের প্রবর্তিত তত্ত্বকে নির্ভুল বলে ঘোষণা করেছিলেন। একশো বছর আগে ঘটেছিল এই ঘটনা। যার স্মৃতিচারণ করে মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের সহকারী অধ্যাপক, সুদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “এই পর্যবেক্ষণের ফলে আমরা যে শুধুমাত্র এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে একটি মৌলিক ধারণা পেয়েছি, তা নয়। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের গঠন এবং সামগ্রিক কীর্তিকলাপ বিশদে বুঝতেও এটি আমাদের সাহায্য করেছে। আরও একটি বিষয় এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যবেক্ষণ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিল যে, বৈজ্ঞানিক হিসাবে আইনস্টাইন কতটা দিকপাল ছিলেন।’’
আবার রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট, অধ্যাপক মাইক ক্রুজ আবার কৃতিত্ব দিচ্ছেন আইনস্টাইন এবং এডিংটন, দু’জনকেই। তাঁর মতে, “আইনস্টাইন এবং এডিংটন, দু’জনকেই কুর্নিশ। একশো বছর আগে যখন ওঁরা এ সব করেছিলেন, তখন বিশ্ব তপ্ত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছে। সেই সময় এমন আবিষ্কার এবং তাকে কৃতিত্ব দেওয়া–নিঃসন্দেহে তারিফযোগ্য।” শুধু কী তাই? উল্লেখযোগ্য আরও একটি বিষয়। চলতি বছরেই মহাকাশে কৃষ্ণ গহ্বরের অস্তিত্ত্ব প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। ঠিক এই বছর, যখন আইনস্টাইনের তত্ত্ব, সঠিক প্রমাণ হওয়ার একশো বছর পূর্ণ হল। আবার চার বছর আগে, ২০১৫ সালে আইনস্টাইন প্রবর্তিত আরও একটি তত্ত্ব গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভস প্রমাণিত হয়েছিল। অর্থাৎ সেটিরও একশো বছর পূর্তি ঘটে গিয়েছে আগেই।
[আরও পড়ুন: ইসলামের ‘অবমাননা’, পাকিস্তানে জ্বলল হিন্দুদের ঘর]
The post শতাব্দী প্রাচীন মহাজাগতিক এক ঘটনাই আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদের প্রমাণ appeared first on Sangbad Pratidin.