সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার (Purulia) বেলগুমা পুলিশ লাইন থেকে স্পেশ্যাল হোমগার্ড এবং তাঁর ছেলের দেহ উদ্ধার। নিহতের স্ত্রীর দাবি, ছেলেকে খুনের পর ওই স্পেশ্যাল হোমগার্ড আত্মঘাতী হয়েছেন। শুধু তাই নয়, স্পেশ্যাল হোমগার্ড আত্মহত্যার আগে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। কী কারণে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিলেন ওই স্পেশ্যাল হোমগার্ড, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হেমন্ত হেমব্রম ওরফে বুড়ু এবং তাঁর স্ত্রী চম্পা আড়শার তানাসি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। একসময় মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। স্কোয়াড থেকে অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যান হেমন্ত। ২০১৩ সালে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তারপর তাঁর প্রেমিকা চম্পা পুলিশের কাছে ধরা দেয়। আত্মসমর্পণের বছর দুয়েকের মধ্যে তারা স্পেশাল হোম গার্ডের চাকরি পায়। অযোধ্যা স্কোয়াড ভেঙে যাওয়ার পর ঝাড়খণ্ডের দলমায় হেমন্তর সঙ্গে চম্পার প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সংসার পাতার সিদ্ধান্ত নেন। আত্মসমর্পণ করার পর স্পেশ্যাল হোমগার্ড পদে চাকরিও পান দু’জনে। চাকরি পাওয়ার পর থেকে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে বেলগুমার পুলিশ লাইনের আবাসনে থাকতেন হেমন্ত।
[আরও পড়ুন: Coronavirus Update: ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে বাংলা, গত ২৪ ঘণ্টায় অনেকটা কমল রাজ্যের করোনা সংক্রমণ]
হেমন্তের স্ত্রী চম্পার দাবি, সোমবার সন্ধেয় স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি হয় তাঁর। সেই সময় সামনেই ছিল বছর ছয়েকের সন্তান সোমজিৎ হেমব্রম। সন্তানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে হেমন্ত। চম্পাকেও খুনের চেষ্টা করে সে। তবে কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচেন চম্পা। এরপর নিজেই নিজের গলার নলি কেটে ফেলেন হেমন্ত। মৃত্যুও হয় তাঁর।
সোমবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। স্পেশ্যাল হোমগার্ড এবং তাঁর ছেলের দেহ উদ্ধার করে টামনা থানার পুলিশ। দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগণ বলেন, “স্পেশ্যাল হোমগার্ড সন্তানকে খুন এবং স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা করে। তবে স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ায় বেঁচে যান। আত্মঘাতী হন হোমগার্ড। তদন্ত চলছে।” ঠিক কী কারণে হোমগার্ড এমন সিদ্ধান্ত নিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।