সুব্রত বিশ্বাস: রেলের কি এখন ‘সাইকেলের’ দশা? জিপিএস সিস্টেম পরিচালিত মোটরগাড়িও রুট ভুল করে না। সঠিক পথেই পৌঁছে যায় গন্তব্যে। কিন্তু রেলের আস্ত ট্রেন এখন অনায়াসে ঢুকে যাচ্ছে অন্য শাখায়! লাইন বরাবর চলতে গিয়ে ভিন্ন লাইনে ঢুকে যাচ্ছে কোন ত্রুটিতে, এ প্রশ্নই এখন যাত্রী মহলে। বাহানাগার কাছে করমণ্ডল-সহ তিন ট্রেনের দুর্ঘটনার পরও শিক্ষা নেয়নি রেল। সোমবারই বারাউনি থেকে নয়াদিল্লিগামী একটি স্পেশাল ট্রেন নারকাটিয়া গঞ্জের দিকে না গিয়ে চলে যায় ভুল রুটে হাজিপুরের দিকে।
স্বাভাবিক ভাবেই তুমুল হইচই শুরু হয় এই নিয়ে। পূর্ব মধ্য রেলের সিপিআরও বীরেন্দ্র কুমার এটাকে সিগন্যালের ত্রুটি বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, “ম্যানুয়াল সিগন্যাল ছিল, তাতে ভুল হওয়ায় এই বিপত্তি ঘটেছিল।” রাস্তা ভুল করার এই অভ্যাস ভারতীয় রেলের খাতায় অতি পরিচিত বলে জানা গিয়েছে। লকডাউনের সময় একাধিক ট্রেন এভাবেই ভুল পথে গিয়ে ‘ভ্রান্তিবিলাসে’র নজির সৃষ্টি করেছে।
[আরও পড়ুন: ‘ঠিক যেমনটা আমরা চেয়েছিলাম, আপনি তেমনটাই করছেন’, মোদিকে নয়া তির তৃণমূলের]
২০২০ সালে ২৪ মে একটি শ্রমিক বোঝাই ট্রেন বাসাই থেকে গোরক্ষপুর যাচ্ছিল। বাসাই ছাড়ার পর সেটি গোরক্ষপুরের বদলে রৌরকেল্লার দিকে চলে যায়। পরের দিন ২৫ মে বারাউনি থেকে বেগুসরাই হয়ে ডিব্রুগড়গামী একটি বিশেষ ট্রেন দ্বারভাঙার দিকে চলে যায়। ২০২২ সালে ৫ আগস্ট বারাউনি থেকে জম্মু তাওয়াইগামী অমরনাথ এক্সপ্রেস সমস্তিপুরের বদলে বিদ্যাপতি নগরের দিকে চলে যায়।
এই ভুল শাখায় ট্রেন চলে যাওয়ার মতো অধিকাংশ ঘটনাই পূর্ব-মধ্য রেলের আওতায়। রেলের অবসরপ্রাপ্ত অপারেশন ম্যানেজার আনন্দ কিশোর এই ধরনের ঘটনাকে ‘মানুষের ভুলে’ এই রুট পরিবর্তন বলে জানান। পারিবারিক দুশ্চিন্তা, বিশ্রামের অভাবে শারীরিক ক্লান্তি ও দক্ষতার অভাব বলে জানিয়েছেন। রেল চালক বা সিগন্যালের গোলযোগ বা ত্রুটিকে দায়ী করলেও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কার এই প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা।