ধীমান রায়, কাটোয়া: লকডাউনে খাবারে টান পথকুকুরদের। খিদের জ্বালায় এক গৃহস্থ বাড়িতে ঢুকে চুরি করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করেছিল সারমেয় (Dog)। অভিযোগ, সেই ‘অপরাধে’ নির্মমভাবে ওই সারমেয়টিকে মারধর করা হয়। ভেঙে দেওয়া হয় তার কোমরও। শুধু তাই নয়, আর যাতে এধরনের কাজ করতে না পারে সে কারণে তার দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল কুকুরটির মুখ। নির্মম এই ঘটনার সাক্ষী পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কেশিয়াপাড়া।
ওই এলাকার রাস্তায় মুখবাঁধা অবস্থায় ছটফট করতে দেখা যায় একটি পথকুকুরকে। রাস্তা দিয়ে তখন যাচ্ছিলেন কেতুগ্রামের বাসিন্দা সুজাতা দত্ত নামে এক মহিলা। তিনি কুকুরটির নিদারুণ অবস্থা দেখে থমকে দাঁড়ান। কুকুরটিকে দেখে কার্যত কেঁদে ফেলেন সুজাতাদেবী। তারপর তিনি তাঁর পরিচিতদের ফোন করে ডাকেন। সারমেয়টিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর একটি পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। আপাতত কাটোয়া ১৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার একটি অব্যবহৃত সরকারি ঘরে রেখে কুকুরটির চিকিৎসা চলছে।
[আরও পড়ুন: করোনা রোগীর দেহ পরিজনদের নিতে চাপ! কাঠগড়ায় রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল]
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, অয়ন দত্তরা বলেন, “সুজাতাদেবীর কাছে আমরা জানতে পারি এই পথকুকুরটিকে বেদম মারধর করা হয়েছে। কেশিয়াপাড়ায় এসে দেখি কুকুরটি ছটফট করছে। মুখটা তার দিয়ে বেঁধে দেওয়ার কারণে শুধু গোঁঙানির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোমরের হাড়ও ভেঙে গিয়েছে। এখন ওষুধ ও স্যালাইন দিয়ে কিছুটা সুস্থ করার চেষ্টা করছি। এরপর এক্স রে করানো হবে। তারপর হাড়ের চিকিৎসা করানো হবে।”
আহত কুকুরটিকে মাংস ও ভাত খাওয়ানো হয়েছে। পাশাপাশি ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। প্রসেনজিতবাবুর কথায়, “আমরা সুজাতাদেবীর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি তখন দেখি কুকুরটির অবস্থা দেখে সুজাতাদেবী কেঁদে ফেলেছেন। তার এই মহানুভবতা দেখে সাধারণ মানুষের শিক্ষা নেওয়া উচিত।” সুজাতা দত্ত বলেন, “রাস্তার কুকুররা এই পরিস্থিতিতে খেতে পাচ্ছে না। খিদের জ্বালায় যদি কোথাও খাবার দেখে মুখ দিতে যায় সেটা তো তাদের অপরাধ নয়। আমাদের সকলের উচিত এই কঠিন পরিস্থিতিতে মানবিক আচরণ করা।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
[আরও পড়ুন: লকডাউনের দিন রাস্তায় কেন? নিয়ম ভঙ্গকারীদের কান ধরে ওঠবোস করাল পুলিশ]
The post বাড়িতে ঢুকে খাবার চুরি! মারধর করে অবলা সারমেয়র কোমর ভাঙল গৃহস্থ appeared first on Sangbad Pratidin.