বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: টেস্ট পরীক্ষায় নকল করার সময় তা দেখতে পেয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষিকা! যার জেরে বকাবকিও করেন তিনি। তার ফল হল মর্মান্তিক। অপমানে আত্মঘাতী হল নদিয়ার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুর থানার নরসিংহনগরের শরৎকুমারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণি ছাত্রী পাপিয়া পাল। অর্থাৎ ২০২২ সালে মাধ্যমিক দেওয়ার কথা ছিল তার। বর্তমানে স্কুলে চলছে মাধ্যমিকের টেস্ট। শনিবার তার পরীক্ষা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছয় কিশোরী। স্কুল সূত্রে খবর, পরীক্ষার হলে বসে নকল করছিল পাপিয়া। হলের পরিদর্শক শিক্ষিকা তা দেখতে পান। স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রী যে কাগজে উত্তর লিখে এনেছিল শিক্ষিকা তা কেড়ে নেন, বকাঝকাও করেন। এই ঘটনায় হাসাহাসি করে পাপিয়ার সহপাঠীরা। তা মেনে নিতে পারেনি কিশোরী।
[আরও পড়ুন: বিজেপির কার্যালয় থেকে ‘উজ্জ্বলা যোজনা’র গ্যাস বিতরণ, দুর্গাপুরে তুমুল বিতর্ক]
পরীক্ষা শেষ হতেই সাইকেল নিয়ে বাড়ি চলে যায় পাপিয়া। সাইকেলটি রেখেই অ্যাসিড খেয়ে নেয় সে। এরপরই ওই ছাত্রী ছুটে যায় তার জেঠিমার কাছে। তাকে বাঁচানোর আরতি জানায়। সঙ্গে সঙ্গে পাপিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ার তাকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ছাত্রীর।
ছাত্রীর বাড়ির লোকের অভিযোগ, “নকল করার জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকা পাপিয়াকে বকার পাশাপাশি কান ধরেও টেনেছিলেন। আর তা দেখে সকলে হাসাহাসি করেছিল। সেই অপমান সহ্য করতে পারেনি পাপিয়া। এরপরই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।” যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা স্পষ্টই জানিয়েছে, সামান্য বকা হলেও কোনওভাবেই অপমান করা হয়নি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রিনা বিশ্বাস বলেছেন, “পরীক্ষা চলাকালীন পাপিয়া টুকলি করছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকা তা দেখে ফেলেন। নকল করার কাগজ চাইলেও বের করতে রাজি হচ্ছিল না।তবে অপমানজনক কোনও কথাবার্তা বলা হয়নি। কান ধরা হয়নি। এমনকী ওর খাতাও কেড়ে নেওয়া হয়নি। ওকে সম্পূর্ণটা লিখতে দেওয়া হয়েছে।”