সুব্রত বিশ্বাস: সংরক্ষিত টিকিট ছাড়া দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রা করা যাচ্ছে না। এই সুযোগে টিকিট পরীক্ষকরা বেআইনিভাবে ট্রেনে যাত্রী তুলছেন, নিয়ে যাচ্ছেন গন্তব্যে। এই অভিযোগ পেয়েই কোমর বেঁধে নেমেছে রেল বোর্ডের সেন্ট্রাল টিকিট চেকিং বিভাগ। ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে এক টিকিট পরীক্ষককে।
দিনকয়েক আগে হাওড়াগামী রাজধানী এক্সপ্রেসে (Rajdhani Express) বেআইনিভাবে চারযাত্রীকে হাওড়া নিয়ে আসছিলেন হেড টিটিই গোলাম নবি। ট্রেনটি কানপুর পৌঁছনোর পর সেন্ট্রাল টিকিট চেকিং বিভাগের আধিকারিকরা ওই যাত্রীদের সন্ধান পায়। তাঁদের আটক করার পাশাপাশি গোলাম নবির কাছে বাড়তি হাজার হাজার টাকা পাওয়া যায়। যা যাত্রীদের থেকে নেওয়া হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের দাবি। গোলাম নবির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি পূর্ব রেলের সিসিএমের কাছেও রিপোর্ট পাঠায় বোর্ড। এরপর হাওড়ার সিনিয়র ডিভিশন্যাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাজীব রঞ্জনের নির্দেশে গোলাম নবিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে বিভাগ। রাজীববাবু বলেন, “সংরক্ষিত ট্রেনে টিকিটবিহীন যাত্রী তোলা চরমতম অপরাধ। এজন্য সারপ্রাইজ চেকিংও হয়। যার ফলে ধরা পড়ে এই বেআইনি কাজ।”
[আরও পড়ুন: দীর্ঘদিন ধরে ঘরবন্দি কেতুগ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক, সরকারি সাহায্যের আরজি পরিবারের]
গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী, দুরন্ত ও শতাব্দী এক্সপ্রেসে এই ধরনের বেআইনি কাজ বেশি হয় বলে সেন্ট্রাল টিকিট চেকিং বিভাগের কর্মীদের দাবি। সূত্রের দাবি, টিকিট দালালদের সঙ্গে টিটিইদের গোপন যোগসাজশে এই ধরনের যাত্রী বিভিন্ন ট্রেনে তোলা হয়। এখন সব কামরা সংরক্ষিত হওয়ায় এই ধরনের কাজ আরও বেশি হচ্ছে বলে অভিযোগ। টিকিট বিহীন বা অসংরক্ষিত টিকিটের যাত্রীদের থেকে মোটা টাকা নিয়ে দালালরা তাঁদের সংরক্ষিত কামরায় তুলে দেয় টিটিইদের সঙ্গে সখ্যতা থাকায়। টিটিইরা নিজেদের সংরক্ষিত সিটই দিয়ে দেয় তাঁদের। এছাড়া কোনও যাত্রী টিকিট সংরক্ষিত করেও না এলে তাদের সিটও দেওয়া হয় ওই সব যাত্রীদের। উল্লেখ্য, পুজোর কিছু দিন আগে দিল্লিগামী দুরন্ত এক্সপ্রেসে আপ ও ডাউন ট্রেনে সারপ্রাইজ চেকিংয়ে ১৯ জন টিকিটবিহীন যাত্রীদের ধরে টিকিট পরীক্ষকদের কাছ থেকে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা পাওয়া যায় বলে বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে।
এদিকে কর্মীর মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য দু’লক্ষ টাকা দাবি করেছেন হাওড়ার চিফ লাগেজ ইন্সপেক্টর দিব্যেন্দু বিশ্বাস, এমনই অভিযোগ বেলুড়ের বুকিং কর্মী বি কে যাদবের। পূর্ব রেলের টুইটার হ্যান্ডেলে এই অভিযোগ করেন তিনি। হাওড়া পার্সেলের কর্মী বন্দনা দেবনাথের সঙ্গে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের আবেদন করেছিলেন। বি কে যাদবের অভিযোগ, পূর্ব রেলের টুইটার হ্যান্ডেলে অভিযোগ করায় তুমুল হইচই পড়ে যায়। হাওড়ার সিনিয়র ডিসিএম রাজীব রঞ্জন বলেন, অভিযোগ গুরুতর। মিউচুয়াল ট্রান্সফার কার্যকর করাটা বাধ্যতামূলক। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দু’জনকে ডেকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।