ধীমান রায়, কাটোয়া: পরকীয়ায় জড়িয়ে পরপুরুষের হাত ধরে বাড়ি ছেড়েছেন শাশুড়ি! তার উপর মেয়েকেও উসকাচ্ছেন। যার ফলে স্বামীকে বিচ্ছেদের ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন ওই মহিলার মেয়ে। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ আটকাতে ‘পথের কাঁটা’ শাশুড়িকে শ্বাসরোধ করে খুন করল জামাই! চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) ভাতারে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মৃতার নাম লীলা আগরওয়াল। বয়স ৪৪ বছর। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার মাহাতা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। লীলাদেবীর স্বামী রাজু আগরওয়াল একটি সাইকেল মেরামতের দোকান চালান। ওই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে আকাশ বোলপুর পুরসভার অস্থায়ী কর্মী। মেয়ে প্রীতির বিয়ে হয়েছে সিউড়ির বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দলুইয়ের সঙ্গে। একটি সন্তানও রয়েছে ওই দম্পতির। জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরে সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন লীলাদেবী। অভিযোগ, কাজ করতে গিয়ে সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক জড়িয়ে পড়েন লীলাদেবী। পাকাপাকিভাবে থেকে যান সুদীপ্তর কাছে। ভাতারের মাহাতা গ্রামে লীলাদেবীর এক আত্মীয়ের বাড়ি। লীলাদেবীকে নিয়ে সুদীপবাবু মাহাতা গ্রামে ঘরভাড়া করে বসবাস শুরু করেন। লীলাদেবীকে তিনি বিয়েও করেছিলেন। মঙ্গলবার রাতে ওই ভাড়াবাড়ি থেকে ভাতার থানার পুলিশ লীলাদেবীর দেহ উদ্ধার করে।
[আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে TMC পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলেকে ‘খুন’, নেপথ্যে রাজনীতি নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা?]
এই ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল লীলাদেবীকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ সুদীপবাবু, মৃতার প্রথমপক্ষছর স্বামী, ছেলে, মেয়ে এবং জামাই প্রসেনজিৎকে জিজ্ঞাসাবাদ করা। খতিয়ে দেখা হয় সকলের কললিস্ট। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্যদের কললিস্ট থেকে তেমন কিছু সন্দেহজনক বিষয় না দেখা গেলেও প্রসেনজিতের কললিস্ট থেকে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধে পর্যন্ত প্রসেনজিতের মোবাইল ফোনের সুইচ অফ ছিল। তাছাড়া তার মোবাইল ফোনের লোকেশনের ভিত্তিতে জানা যায় ঘটনার দিন দুপুর নাগাদ গুসকরা শহর এলাকায় ছিল সে। তাকে চেপে ধরতেই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, প্রসেনজিতই শ্বাসরোধ করে খুন করেছে শাশুড়িকে। ধৃত যুবক জানিয়েছে, ইদানিং স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। তাতে ইন্ধন দিচ্ছিলেন শাশুড়ি লীলাদেবী। এমনকি লীলাদেবী হুমকি দিয়েছিলেন মেয়ের অন্যত্র বিয়ে দেবেন। আর সেই রাগেই পরিকল্পনামাফিক মাহাতা গ্রামে গিয়ে প্রসেনজিৎ ও তার শাশুড়িকে খুন করে প্রসেনজিৎ।