shono
Advertisement

Breaking News

চিটফান্ড খুলে কোটি টাকা তছরূপ, নাসিক থেকে গ্রেপ্তার মহিলা কর্ণধার লিজা-সহ ১৪

পূর্ব কলকাতার বাসিন্দাদের কোটি কোটি টাকা তছরূপের অভিযোগ।
Posted: 10:07 PM Apr 19, 2022Updated: 10:15 PM Apr 19, 2022

অর্ণব আইচ: এন্টালি আর বেনিয়াপুকুর জুড়ে রেস্তরাঁ, স্কুল, বিউটি পার্লার, আরও বহু সম্পত্তি। আর সেই সম্পত্তি দেখিয়ে হাজারের উপর আমানতকারীর কাছ থেকে কোটি টাকা তোলার অভিযোগ চিটফান্ডের (Chitfund) মহিলা কর্ণধারের বিরুদ্ধে। এলাকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, মোটা সুদ সহ আসল ফেরত দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে কয়েকশো কোটি টাকা তোলা হয়েছে। গত মাস থেকে হঠাৎই কলকাতা ছেড়ে উধাও চিট ফান্ডের মহিলা কর্ণধার এলিজাবেথ মুখোপাধ্যায় ওরফে লিজা। একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ায় তড়িঘড়ি বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’ তৈরি করে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) গোয়েন্দা বিভাগ। মহারাষ্ট্রের নাসিক (Nasik) থেকে লিজাকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।

Advertisement

এক পুলিশকর্তা জানান, এই মামলায় এখনও পর্যন্ত মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আটজন ‘সেভ দ্য বেয়ারফুট’ নামে সংস্থাটির কর্মী ও এজেন্ট। বাকি ৬ জন কর্তা। তাঁদের মধ্যে সংস্থার একাধিক অধিকর্তা রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, গত প্রায় এক বছর ধরে এই সংস্থাটির উত্থান। এনজিওর (NGO)নাম করে আসা এই সংস্থাটি ক্রমে আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলতে শুরু করে। পূর্ব কলকাতার এন্টালির ডা. সুরেশ সরকার রোডের একটি অংশ জুড়ে সার দিয়ে পরপর কিন্ডারগার্টেন স্কুল, একাধিক রেস্তরাঁ, বিউটি পার্লার, এমনকী, গেস্ট হাউসও। এ ছাড়াও বেনিয়াপুকুরের সৈয়দ লেনে রয়েছে বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁ। এই বিপুল সম্পত্তি দেখিয়ে গত কয়েক মাস ধরে টাকা তুলতে শুরু করেন লিজা ও তাঁর লোকেরা। বলা হত, টাকা লগ্নি করলে তা ব্যবসায় খাটানো হবে। তার বদলে প্রচুর টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

[আরও পড়ুন: বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের পরিচালনায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, ২ দিন নিউটাউনেই রাত্রিযাপন]

তৈরি করা হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের স্কিম (Schemes)। বলা হত, এক লাখ টাকা দিলে দেড় মাসের মধ্যেই ফেরত দেওয়া হবে দেড় লাখ টাকা। মাস তিনেকের মধ্যেই টাকা হয়ে যাবে দ্বিগুণ। প্রথমদিকে আমানতকারীদের বিভিন্ন উপহারও দেওয়া হয়। পার্ক সার্কাস, এন্টালি, বেনিয়াপুকুর, কড়েয়া এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এজেন্টরা। তাদের কথা শুনেই প্রথমে কয়েকজন টাকা লগ্নি করতে শুরু করেন। কয়েকজন আমানতকারী আংশিক টাকাও ফেরত পান। সেই উদাহরণ দেখিয়ে লিজা ও তাঁর সংস্থার কর্মী, এজেন্টরা নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করে তোলেন। বিপুল টাকা সুদ পাওয়ার লোভে এগিয়ে আসেন ওই এলাকার বহু ব্যবসায়ী। তাঁদের দেখাদেখি আসেন এলাকার বাসিন্দারাও। কেউ এক বা দেড় লাখ, আবার কেউ বা পাঁচ লাখ টাকাও লগ্নি করেন।

[আরও পড়ুন: স্ত্রীকে মিথ্যে বলে দিঘার হোটেলে প্রেমিকার সঙ্গে রাত কাটানোর ছক, এ কী হল যুবকের?]

আমানতকারীদের দাবি, হাজার দু’য়েক বাসিন্দা টাকা লগ্নি করেছেন, যার পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকা। গত কয়েক মাস ধরে টাকা চেয়ে লিজার উপর চাপ দিচ্ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। চাপ বাড়ছিল এজেন্টদের উপরও। হঠাৎই ব্যবসাপত্র গুটিয়ে উধাও হয়ে যান কর্ণধাররা। বন্ধ করে দেওয়া হয় অফিসও। গত সপ্তাহ থেকে বেনিয়াপুকুর, কড়েয়া ও এন্টালি থানায় তিনটি মামলা দায়ের হয়। কিন্তু টাকার পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ‘সিট’ তৈরি করে তদন্ত শুরু করে। নিজেদের বাঁচাতে নাসিকে গিয়ে নতুনভাবে চিটফান্ড করার ছক কষছিলেন লিজা ও অন্যরা। সূত্রের খবর মারফত লিজা সহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের জেরা করে চিট ফান্ডের অন্যান্য মাথা ও এজেন্টদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement