সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ফের চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণহানি। কলকাতা, সল্টলেকের পর এবার ঘটনাস্থল ঝাড়গ্রাম। স্কুটি নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হন দুই বন্ধু। গুরুতর জখম অবস্থায় ৯ দিন ভর্তি থাকার পর মৃত্যু যুবকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ওই যুবকের আরেক বন্ধু। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ মৃত্যু হয় বছর তেইশের তরুণ সৌরভ সাউ। তাঁর বন্ধু বছর বাইশের অক্ষয় মাহাতো ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
ঝাড়গ্রাম শহরের বেনাগেড়িয়ার বাসিন্দা সৌরভ এবং অক্ষয় দুই বন্ধু। তাঁরা ২২ জুন একটি স্কুটি নিয়ে জামবনি থানার খাটকুড়াতে ঘুরতে গিয়েছিলেন। খাটকুড়াতে রাস্তা তৈরির কাজ হচ্ছে। সেখানে ঠিকাদার সংস্থার নির্মাণ সমগ্রী বোঝাই একটি গাড়ি ছিল।সেই গাড়ি থেকে নির্মান সামগ্রী চুরি যাওয়ার অভিযোগ ছিল। আর সেই এলাকার কাছাকাছি তারা দুই বন্ধু গিয়েছিল। বিকেলে বাড়ি ফেরার সময় তাদের দেখে এলাকার লোকজন চোর সন্দেহ করে। এবং তাঁদের দুজনকে গণপিটুনি দিতে থাকে। এই ঘটনায় তাঁরা রীতিমতো গুরুতর জখম হন। ঘটনার খবর জামবনি থানার পুলিশ পাওয়া মাত্র তাদের উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। তাঁদের পরিবারের লোকজন পুলিশ মারফত খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখে তাদের ছেলেদের ওই অবস্থা। এর পর ২৭ জুন জামবনি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। এদিন সকালে মৃত্যু হয় সৌরভের।
[আরও পড়ুন: দম্পতি পরিচয়ে হোটেলে যৌনতা? বর্ধমানের মহিলাকে ‘খুন’ করে উধাও পুরুষসঙ্গী]
সৌরভের বাবা পেশায় টোটো চালক অবনী সাউ বলেন,"আমার ছেলে তার বন্ধুর সঙ্গে স্কুটি নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল। এলাকার মানুষজন চোর সন্দেহ করে আমার ছেলে ও তার বন্ধুকে মারধর করে। পরে আমরা বিষয়টি জামবনি থানার মারফত জানতে পারি। হাসপাতালে এসে দেখি আমার ছেলে ও তার বন্ধু ভর্তি রয়েছে। আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলের মৃত্যু হয়।" তিনি আরও বলেন, চোর সন্দেহে কাউকে এভাবে মারধর ঠিক না। সেই জন্য পুলিশ প্রশাসন রয়েছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, "তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘটনায় যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ করা হলে আরও আগে তদন্ত শুরু হতে পারত।"