বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ভুলবশত একজন মহিলার ফোনে মিসড কল করাকে কেন্দ্র করে এক যুবককে বেধড়ক মারধর, হুমকির অভিযোগ। অপমানে আত্মঘাতী যুবক। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার (Nadia) নবদ্বীপ থানার চড়স্বরূপগঞ্জ সুকান্তপল্লি এলাকায়। ক্ষোভে মারধরে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম অমিত দেবনাথ (২৬)। তাঁর বাড়ি চড়স্বরূপগঞ্জ সুকান্তপল্লি এলাকায়। অভিযোগ, কয়েকদিন আগে অমিত দেবনাথের ফোন থেকে নবদ্বীপের ভাগীরথী বিদ্যাপীঠপাড়ার বাসিন্দা বিজন সমাজদারের স্ত্রী পূর্ণিমা সমাদ্দারের ফোনে মিসড কল গিয়েছিল। সেখানেই অশান্তির সূত্রপাত। মিসড কল করায় বিশ্বকর্মা পুজোর দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ অমিত দেবনাথকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বিজন সমাদ্দার-সহ তার পরিচিত আরও তিনজন বুড়ো সমাদ্দার, সঞ্জিত সমাদ্দার ওরফে কালু এবং রাহুল সমাদ্দার অমিতকে চড় থাপ্পড় মারে। এবং হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। সেই সময় অমিত তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও রবিবার সকাল ১০ টা নাগাদ বিজন সমাদ্দার ফের ফোন করে অমিতকে নবদ্বীপের পানশিলা স্কুলের কাছে একটি চায়ের দোকানে ডাকেন।
[আরও পড়ুন: বিধানসভায় বিরোধীদের শারদ শুভেচ্ছা মমতার, সৌজন্য দেখিয়েও প্রত্যাখ্যান শুভেন্দুর]
জানা গিয়েছে, অমিত দেবনাথ সেখানে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, বিজন সমাদ্দার-সহ ওই চারজন মিলে অমিতকে হুমকি দেন এবং চড় থাপ্পড় মারেন। এরপর বাড়ি ফিরে আত্মঘাতী হন অমিত। ঘর থেকে উদ্ধার হয় ঝুলন্ত দেহ। তড়িঘড়ি তাঁকে মহেশগঞ্জ গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা অমিতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অমিতের দাদা জয়দেব দেবনাথ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, ভুলবশত ফোন চলে গিয়েছিল।
এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হতেই উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত সঞ্জিত সমাদ্দার ওরফে কালুর বাড়ি-সহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। চরম উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নবদ্বীপ থানার পুলিশ। পুলিশ গেলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান সিপিআইএম এবং বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বরা। তৃণমূলের পার্টি অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে যুবক অমিত দেবনাথকে মারধর, হুমকি, অপমান করার অভিযোগ তুলে এবং তার প্রতিবাদে সোমবার নবদ্বীপ-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কের কলাতলা মোড়ে পথ অবরোধে সামিল হন এলাকার লোকজন এবং স্থানীয় বিজেপি স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে নবদ্বীপ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সজল কর বলেন, “ওই যুবকের মৃত্যু অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। ওই যুবককে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করা এবং অপমান করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেটা সম্পূর্ণ ভুল। আমাদের দল বড় হওয়ায় অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। এটি একটি ব্যক্তিগত ব্যাপার। এর সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে দেওয়া উচিত নয়।” ইতিমধ্যেই পুলিশ সঞ্জিত সমাদ্দার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি তিনজন পলাতক।