অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: কালীপুজোর (Kali Puja) রাতে নেশার টানই কাল! চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লকের ৪ নং দশগ্রাম অঞ্চলের খাজুরি এলাকার দীঘিপাড়া এলাকায়। এই ঘটনায় আবগারি দপ্তর ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।
সবংয়ের দশগ্রাম অঞ্চলের খাজুরি বুথের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর মধু মল্লিক। বয়স মাত্র ২৩ বছর। তাঁর দুই ছেলেও রয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবারও দিনমজুরের কাজ সেরে বাড়ি ফেরে মধু। তারপর এলাকায় বসেই চোলাই মদ খায়। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশান্তিও করে মধু। এরপর বাড়ির সদস্যদের নজর এড়িয়ে হাড়ি-সহ বাড়ির বহু জিনিসপত্র ও সাইকেল বিক্রি করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। মধ্যরাতে হাজির হয় শ্বশুরবাড়ি। সেখানে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি করে সে। এর কিছুক্ষণ পরই ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়ে।
[আরও পড়ুন: দীপাবলিতেই কিস্তিমাত, মাত্র ৬০ টাকা দিয়ে লটারির টিকিট কেটে কোটিপতি বাংলার কৃষক]
তখনই পরিবারের সদস্যরা মধুকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি স্থানীয় একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময় পথে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের মা জবা মল্লিক বলেন, “গতকাল মদ খেয়ে বাড়িতে ঝামেলা করার পর ছেলে শ্বশুরবাড়িতে চলে যায়। তারপর সেখানেও প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান করে তারপরই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়।” এই ঘটনায় তিনি সবং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, দশগ্রাম অঞ্চলের খাজুরি বুথ, হরেকৃষ্ণ বুথ এলাকায় কিছু অসাধু ব্যক্তি বহুদিন যাবৎ চোলাই মদের কারবার চালাচ্ছে। চোলাই মদের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থাও চলছে গোপনে। এর ফলে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। কম বয়সি ছেলেরা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। এই মদের জেরে বাড়ছে দাম্পত্যকলহও।
একের পর এক মদ্যপানে মৃত্যুর ঘটনায় আবগারি দপ্তর ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় চোলাই মদ বিক্রির ঘটনা পুলিশ-প্রশাসন ও আবগারি দপ্তরের প্রতিনিধিদের বারংবার জানানো হয়েছিল। ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি, ফলে দিনের পর দিন এলাকায় রমরমিয়ে চলছে বেআইনি ব্যবসা।