সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুগের পর যুগ, দশকের পর দশক কেটে যাচ্ছে। কিন্তু বর্ণবৈষম্য বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের। বুধবার বর্ণবৈষম্যের অভিযোগে ফের এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট (South Africa Cricket)! যেখানে নাম জড়িয়ে গেল গ্রেম স্মিথ, এবি ডি’ভিলিয়ার্সের মতো ক্রিকেট কিংবদন্তিদেরও! ভারত সফরের ঠিক আগে প্রবলভাবে মুখ পুড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডেরও।
ঠিক কী হয়েছে? দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে বর্ণবৈষম্য সত্যিই এখনও আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখছিল এসজেএন কমিশন (Social Justice and Nation-Building Commission)। এবং সেই কমিশনের পেশ করা দু’শো পঁয়ত্রিশ পাতার রিপোর্টে পরিষ্কার লেখা রয়েছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড কর্তারা, দেশের নামজাদা ক্রিকেটার-সহ অনেকেই যথেচ্ছ বর্ণবৈষম্য চালিয়েছেন। অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের বর্তমান ডিরেক্টর গ্রেম স্মিথ (Graeme Smith), হেড কোচ মার্ক বাউচার এবং কিংবদন্তি এবি ডি’ভিলিয়ার্সের (AB de Villiers) দিকে। বলা হয়েছে, এঁরা কোনও না কোনও বর্ণবৈষম্যকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। দল নির্বাচন করেছেন বর্ণের ভিত্তিতে! যে অভিযোগ মারাত্মক। শুধু তাই নয়, দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডে চিরস্থায়ী রদবদলের নির্দেশও দিয়েছে কমিশন। বলা হয়েছে, সেখানে ওম্বুডসম্যান বসাতে। যাঁর কাজ হবে, বর্ণবৈষম্য যাতে আর না হয়, সেটা দেখা।
[আরও পড়ুন: বিরাট সংঘাত! ‘মিথ্যা বলছেন কোহলি’, সরাসরি জানিয়ে দিল সৌরভের বোর্ড]
স্মিথের বিরুদ্ধে অভিযোগ, থামি সোলেকিলসকে ২০১২ সালে না খেলানো নিয়ে। বলা হচ্ছে, মার্ক বাউচার অবসর নেওয়ার পরেও থামিকে ভাবা হয়নি। সেই সময় দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ড, স্মিথ স্বয়ং এবং নির্বাচকরা মিলে অনেক কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটারের কেরিয়ারের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিলেন। ডি’ভিলিয়র্সের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ। ২০১৫ সালে ভারত সফরের সময় খায়া জন্ডোকে খেলাননি এবি। তিনি তখন টিমের অধিনায়ক ছিলেন। এবং ডুমিনি (JP Dumini) ছিটকে যাওয়ার পরেও জন্ডোকে না খেলিয়ে তিনি সিরিজের শেষ ম্যাচে ডিন এলগারকে খেলান। যিনি কি না ছিলেন টেস্ট টিমে।
[আরও পড়ুন: ‘পদত্যাগ করুন’, বিরাট বিস্ফোরণের পরই সৌরভ গঙ্গোধাপ্যায়কে তোপ নেটিজেনদের]
মার্ক বাউচার আবার স্বীকার করেছেন যে, সতীর্থ স্পিনার পল অ্যাডামসের (যিনি শ্বেতাঙ্গ ছিলেন না) একটা বিশেষ নামকরণ হয়েছিল তাঁর বর্ণের ভিত্তিতে। আর সেই নামকরণের নেপথ্যে তিনিও ছিলেন। তবে বাউচার বলে দিয়েছেন যে, তদন্ত প্রক্রিয়াকে সমর্থন করলেও তিনি কোনও দিন কোনও ক্রিকেটারের বর্ণের বিচারে সিদ্ধান্ত নেননি। নিয়েছেন টিমের স্বার্থের কথা ভেবে। কিন্তু এ সব বললেও বা শুনবে কে? কমিশন তো রায় দিয়েই দিয়েছে, সে দেশের ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বোর্ডকে লজ্জার সমুদ্রে নিক্ষেপ করে। হায় রে, দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট!