সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার শাসকদল তৃণমূলের (TMC) আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে কৌতূহল, সমালোচনার আঁচ খানিকটা বেড়েছে রাজনৈতিক মহলে। নতুন তৃণমূল-পুরনো তৃণমূল, নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের মতো একাধিক শব্দ বহু চর্চিত হয়েছে বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলনেত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাপতি – দলের শীর্ষ নেতারা এই বার্তা স্পষ্ট করে দেওয়ার পরও তাঁদের মধ্যে ‘মতানৈক্য’ বিষয়টিকে হাইলাইট করা হচ্ছে নানা মহলে। আর এই আবহেই দলের ঐক্য নিয়ে সাফ কথা জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়ে দিলেন, পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু দলে নেত্রী একজনই, তিনি মুখ্যমন্ত্রী।
দলে দ্বন্দ্ব আছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে সত্যিই কি পদ্ধতিগত পার্থক্য আছে? এই প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, ”পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকতেই পারে। সেটা দলের জন্য স্বাস্থ্যকর। যদি না থাকে, তাহলে তো মিথ্যে বলা হবে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হয়ে গেল। আমার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ নেই। আমি তো বারবার বলি, এখনও বলছি, আমার গলা কেটে দিলেও ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’, ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বেরবেই। তৃণমূলে দুটো দল নেই। আর দুটো, তিনটে, চারটে – যে কটা দলের কথাই বলুন না কেন, আমার কাজ সব জায়গায় ঢুকে জোড়াফুল ফোটানো।” এর পর দলীয় দ্বন্দ্বের প্রশ্নে অভিষেকের জবাব, ”সারা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের এত নেতা, কর্মী, সমর্থক। তাঁদের কারও সঙ্গে আমার কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এটাই সবচেয়ে বড় কথা। এ বিষয়ে আমি তাঁদের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা জানাই।”
[আরও পড়ুন: চাকুরিজীবীদের জন্য বড় ঘোষণা, ইপিএফে বাড়ল সুদের হার]
‘সেনাপতি’ অভিষেকও ‘নেত্রী’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকেন। তাঁর নির্দেশমতো প্রতি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। লোকসভা ভোটের আগেও তেমনই এক নির্দেশ আসবে তাঁর কাছে। নিজের সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ড হারবারেই সীমাবদ্ধ থাকবেন অভিষেক নাকি গোটা বাংলায় সংগঠনকে চাঙ্গা করবেন? এ প্রশ্নের জবাবে অভিষেক জানান, সবই নির্ভর করবে তৃণমূল সুপ্রিমোর পরিকল্পনার উপর। তিনি যেমনটা বলবেন, তেমনটাই হবে। তিনি দলের অনুগত সৈনিক মাত্র।
[আরও পড়ুন: কিশোরী মেয়েকে দু’বার বিক্রি মায়ের! ‘খদ্দেরে’র অত্যাচারে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুতে রহস্য]
নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ার যথেষ্ট চমকপ্রদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো রাজনীতিকেরে নিকটাত্মীয় হয়েও স্রেফ নিজের পরিশ্রম, মেধা, কৃতিত্ব দিয়ে জনতার রায়ে সাংসদ হয়েছেন। প্রতাপশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে লড়ে শেষ হাসি হেসেছেন। গত ১০ বছর ধরে সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ড হারবারের উন্নতিতে নিজেকে একেবারে সমর্পণ করেছেন। অভিষেক কি নিজের সন্তানদেরই একই পথ দেখাবেন? এই প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের জবাব, ”আমি ওদের বারণ করব না। কিন্তু আমি চাই না যে আমি যে সংগ্রাম করছি, তা ওরাও করুক। আমার লড়াই আমি লড়ে নেব। তবে ওই বাঙালির একটা কথা আছে, ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’, আমি সেটাই চাইব আমার ছেলেমেয়ের জন্য।”