সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পরাক্রম দিবসে’র অনুষ্ঠান চলাকালীন ‘জয় শ্রীরাম’ (Jai Sri Ram) স্লোগান, যা নিয়ে আপাতত উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার আগেই তাঁকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দেওয়া হয় দর্শকাসন থেকে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কড়া বার্তা দিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে যান। বিষয়টি নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতৃত্ব। ঘটনার ঠিক পরদিন রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির জনসভায় দাঁড়িয়ে জবাব দিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বললেন, ”হাজারবার জয় শ্রীরাম বলুন, মানুষ সব বুঝে নেবে। সেদিন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে উচিত শিক্ষা পেয়েছিলেন, এবার নেতাজিকে অপমানের যোগ্য জবাবও পাবেন।”
কোনও মনীষীর জন্মদিনের অনুষ্ঠান ঘিরে রাজনৈতিক তরজা নতুন নয়। তবে শনিবার ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানের ছন্দপতনও বিরল ঘটনা। বিধানসভা ভোটের আগে এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে যে তৃণমূল, বিজেপি – দু’পক্ষই নিজেদের মতো করে মাঠে নামবে, তা এতক্ষণে স্পষ্ট। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনে মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে নেতাজিকে নিয়েই কোনও বক্তব্য না রেখেই মঞ্চ ছেড়ে নেমে যান। আর তাঁর ভূমিকার সমালোচনায় নেমেছেন একের পর এক বিজেপি নেতা। কেন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে এত আপত্তি? এই প্রশ্ন তুলেই কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সায়ন্তন বসু থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পল – কেউই বিঁধতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
[আরও পড়ুন: ‘নেতাজিকে নিয়ে রাজনীতি করবই, বাপের হিম্মত থাকলে আটকাক’, ফের বিতর্কিত মন্তব্য দিলীপের]
পালটা তৃণমূলও অত্যন্ত কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।শনিবারই এ নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়রা। আর রবিবার তা নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কুলতলির সভা থেকে কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বললেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বক্তব্য রাখতে বাধা দেওয়া হয়েছে। ভিক্টোরিয়ায় তেমনই পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। বক্তৃতা না দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর জবাব পেয়েছিলেন। তাতেও শিক্ষা হয়নি। নেতাজিকে যাঁরা অপমান করল, তাদের শিক্ষা দেবেন বাংলার মানুষ। দেখবেন, যেন কোথাও মাথা এরা তুলে না দাঁড়াতে পারে।”
[আরও পড়ুন: শুভেন্দু অধিকারীর পালটা, সোমবার পুরশুড়ায় জনসভা মমতার]
প্রসঙ্গত, উনিশে লোকসভা ভোটের আগে উত্তর কলকাতায় অমিত শাহর মিছিল চলাকালীন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার মতো নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছিল। সেবারও রাজনৈতিক তরজায় উত্তপ্ত হয়েছিল নির্বাচনী আবহ। উত্তর কলকাতায় গোহারান হেরেছিল বিজেপি। এবার নেতাজির জন্মদিনে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের রেশ কীভাবে রাজনীতির লড়াইয়ে প্রতিফলিত হয়, সেটাই এখন দেখার।