ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: শুধু জার্সি বদলেছে। স্বভাব বদলায়নি। সেই একই ধাঁচে হিংসা। বিজেপির নবান্ন (Nabanna) অভিযানে অশান্তির নেপথ্যে সিপিএমের হাত দেখছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, সিপিএমের হার্মাদরাই বিজেপিতে গিয়েছে। তাঁরাই জার্সি বদলে অশান্তি করছে।
মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের নামে বিজেপির (BJP) কর্মী সমর্থকদের একটা বড় অংশ কার্যত জঙ্গি আন্দোলনে নেমে পড়ে। দোকানপাট ভাঙচুর, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া, ইট ছোঁড়া, পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া, এমনকী একা পেয়ে পুলিশ আধিকারিককে মারধর করার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে বিজেপি কর্মীরা। বিজেপি কর্মীদের হাতে প্রহৃত কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায় এখন এসএসকেএমে (SSKM) ভরতি। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেবজিতবাবুকে হাসপাতালে দেখতে এসে এই হিংসা নিয়ে কার্যত ফুঁসে ওঠেন।
[আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসেই লোডশেডিং! পরিদর্শনে অন্ধকারেই বসে রইলেন মন্ত্রী, নৈরাজ্য যোগীরাজ্যে]
অভিষেক অভিযোগ করেন, “খালি জার্সি বদলেছে সিপিএম (CPIM)। যারা মরিচঝাঁপি করেছে, সিঙ্গুর করেছে, নন্দীগ্রাম করেছে, তারাই এগুলো করছে। শুধু জার্সি বদলেছে। আগে লাল পতাকা হাতে নিয়ে গুন্ডামি করত, এখন পতাকার রং বদলে গেরুয়া হয়েছে। আগে ইনকিলাব জিন্দাবাদ বলে গুন্ডামি করত, এখন জয় শ্রীরাম বলে।” সিপিএমের উদ্দেশ্যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের প্রশ্ন, কই সিপিএম তো একটা বিবৃতিও কাল থেকে দেয়নি, যে এই ধরনের আন্দোলন আমরা সমর্থন করি না! কারণ ওদের হার্মাদরাই তো এখন বিজেপিতে ঢুকে এসব করছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, যারা এই হামলার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের অতীত রেকর্ড খতিয়ে দেখা উচিত।
[আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে থাকবেন রাষ্ট্রপতি, শনিবার লন্ডন যাচ্ছেন দ্রৌপদী মুর্মু]
বস্তুত, বঙ্গ রাজনীতিতে রাম-বাম আঁতাতের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই ধীরে ধীরে সিপিএমের ভোট বিজেপি শিবিরে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে তৃণমূল। বিজেপির নবান্ন অভিযানের পর সেই পুরনো তত্ত্ব ফের উসকে দিলেন অভিষেক। আসলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে তৃণমূল স্তরে বিজেপি-সিপিএমের অঘোষিত জোট হতে পারে, সেটা ভালই আন্দাজ করতে পারছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সম্ভবত সেকারণেই আগে থেকে কর্মীদের বাম-রাম জোট নিয়ে সতর্ক করে রাখলেন তিনি।