কৃষ্ণকুমার দাস: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) জানানোর দিন কয়েকের মধ্যেই যে সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের নানা সমস্যার সমাধান হচ্ছে, তা আরও একবার প্রমাণ হল উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ির দুই ঘটনায়। ইতিমধ্যে সফর সম্পূর্ণ করা জেলাগুলির নানা ইস্যু নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন অভিষেক। বৈঠকে বসে দার্জিলিং,কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমান সফরকালে যে সমস্ত অভিযোগ ও সমস্যা দেখতে পেয়েছেন, সেগুলির সমাধান সম্পর্কেও রিপোর্ট নিয়েছেন। যে সমস্যাগুলির এখনও সমাধান হয়নি, সেগুলিও দ্রুত মিটিয়ে দিতে জেলাভিত্তিক দলীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন। অমীমাংসিত সমস্যাগুলি দ্রুত সমাধানের জন্য অভিজ্ঞ নেতাদের নিয়ে একটি টিমও তৈরি করার নির্দেশ দেন তিনি। ওই টিমের সদস্যরা জেলায় জেলায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলি সরেজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।
রেশন কার্ড থেকে রাস্তার আলো, দু’টি সমস্যাই দ্রুত মিটিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এখানেই শেষ নয়, বুধবার জামুরিয়ায় তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচিতে এসে স্থানীয় বাসিন্দারা একটি দমকল ইঞ্জিন চেয়ে আবেদন করেন ‘মুশকিল আসান’ অভিষেকের কাছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে ওই এলাকায় পানীয় জলের সংকটের কথাও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শোনার পর দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: এগরা বিস্ফোরণ: ৪৮ ঘণ্টা পর মিলল সাফল্য, ওড়িশা থেকে পুলিশের জালে ভানু বাগ]
দিন দুয়েক আগে আরএসএসের এক কর্মী পূর্ব বর্ধমানে রোড শো চলার সময় অভিষেকের কাছে এসে তাঁর সমস্যার কথা জানান। সেটিও তিনি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে এই বিষয়টি ইঙ্গিত করেই জামুরিয়াতে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি অত্যন্ত খুশি যে, বিজেপি এবং আরএসএস কর্মীরাও তাঁদের সমস্যা সমাধানের জন্য আমার কাছে আসছেন। আসলে ওদের সঙ্গে কথা বলার পর আমার উপলব্ধি হয়েছে, বিজেপি এবং আরএসএস কর্মীরা ওঁদের দিল্লির নেতাদেরও বিশ্বাস করেন না। একমাত্র দিদিই (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ওঁদের সাহায্য করতে পারেন।’’
জনসংযোগ যাত্রার শুরুর দিকে যখন জলপাইগুড়ি জেলায় সফর করছিলেন অভিষেক, ঠিক তখনই ওই এলাকার গয়ারকাটা থেকে ‘একডাকে অভিষেক’-এ একটি অভিযোগ আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তার আলো সংস্কারের দাবি জানান। বলার অপেক্ষা রাখে না, অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গেই প্রশাসনিক মহলে যোগাযোগ করা হয়। ইতিমধ্যে ওই রাস্তার আলো সংস্কার হয়ে গিয়েছে এবং সন্ধ্যার পর গোটা এলাকা ঝলমল করছে বলে খবর এসে গিয়েছে।
উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা সমীর স্যান্নাল কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা না দেওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরে রেশন কার্ড পাচ্ছিলেন না। রায়গঞ্জে যখন তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে সফর করছিলেন অভিষেক, তখনই তাঁর কাছে এই রেশন কার্ড না পাওয়ার বিষয়টি জানান সমীরবাবু। বিষয়টি জানার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করে নিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করতে নির্দেশ দেন। এদিনই খাদ্য দপ্তরের তরফে সমীরবাবুর হাতে রেশন কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয়। নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে পথে নেমে এভাবেই একের পর এক বাংলার মানুষের দীর্ঘদিনের সমস্যা মিটিয়ে চলেছেন অভিষেক।