অর্ণব দাস, বারাকপুর: ভাটপাড়ায় চায়ের দোকানে ঢুকে তৃণমূল নেতাকে গুলিতে ঝাঁজরা করা, বোমাবাজির ঘটনায় মূলচক্রী হিসেবে চিহ্নিত সুজল প্রসাদকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। সোমবার জগদ্দল এলাকার বারুইপাড়া নামে একটি জায়গা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। খুনের পর এই এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছিল সুজল। গত কয়েকদিনে ধৃতদের লাগাতার জেরার পর তার খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সুজলের গ্রেপ্তারিতে এই ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চারে। আরও বেশ কয়েকজন পলাতক বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
ধৃত সুজল প্রসাদ।
গত ১৩ নভেম্বর, নৈহাটিতে উপনির্বাচনের দিন পাশের কেন্দ্র ভাটপাড়ায় সাতসকালে শুটআউটের ঘটনা ঘটে। চায়ের দোকানে বসে থাকা অশোক সাউকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ হয়। চলে বোমাবাজিও। তাতে মৃত্যু হয় তৃণমূলের প্রাক্তন ওয়ার্ড সভাপতি অশোক সাউ। রোমহর্ষক সেই ঘটনার তদন্তে নেমে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ প্রথমে কওসর আলি নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। তার সূত্র ধরে সুজল পাসোয়ান নামে আরেকজনকে জালে আনেন তদন্তকারীরা। তবে মূল অভিযুক্ত সুজল প্রসাদকেই খুঁজছিল পুলিশ। সে গত পাঁচদিন ধরে পাশের এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছিল। ধৃতদের জেরা করে সুজলের সন্ধান পান গোয়েন্দারা। জগদ্দল থানা এলাকার অদূরে বারুইপাড়া থেকে সোমবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, ধৃত সুজল প্রসাদ ২০২০ সালে ভাটপাড়ার একই জায়গায় নিহত আকাশ প্রসাদের ভাই। দাদার খুনের বদলা নিতেই সুজল তৎকালীন তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি অশোক সাউকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল। চার বছর ধরে নিখুঁত পরিকল্পনা করেই অপারেশন হয়। পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া জানান, সুজলের বিরুদ্ধে আগেও অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ ছিল। সে বিহারে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে ট্র্যাক করে রাজ্যে ফিরিয়ে আনে। মামলা দায়ের হয়। জামিনে মুক্ত ছিল সুজল। তারই মাঝে সে অশোক সাউ হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। কমিশনার জানান, এই ঘটনায় সক্রিয়ভাবে ৫ জনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। বাকি কয়েকজনও জড়িত বলে জানা গিয়েছে।