সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের খুঁটিনাটি নিয়ে মানুষ সচেতন করে যাচ্ছে ‘ওয়ার্ল্ড ওর্মিটার (world ometer)’ নামের একটি ওয়েবসাইট। ওই ওয়েবসাইট জানিয়েছে সংখ্যা অনুপাতে বাংলাদেশে মৃত্যুহার বেড়েছে। এটি সর্বশেষ যে পরিসংখ্যান দিয়েছে তাতে অন্যান্য অনেক দেশ মারণ ভাইরাসের কবলে পড়লেও চিন বা স্পেনের থেকে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার বেশি।
চিনের ইউহান থেকে এই ভাইরাস ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ২০৫টি দেশে। বিশ্বব্যাপী এখনও পর্যন্ত এতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখের মানুষ। মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষের। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস চিনে তাণ্ডব চালানোর পর ইতালি ও স্পেন-সহ অন্য দেশগুলিকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। ইউরোপের দেশটিতে এরই মধ্যে ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনা ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবল বসিয়েছে বাংলাদেশেও। এখন সেখানে পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। সংখ্যায় কম হলেও আশঙ্কার কথা হচ্ছে, মৃত্যুর হারে ইটালির পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
[আরও পড়ুন: সংক্রমণের আশঙ্কায় ঢাকার মসজিদে তালাবন্দি ৩২১ জন তবলিঘি জামাত সদস্য ]
যদিও আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি ইউরোপ ও আমেরিকার মতো উন্নত দেশের চেয়ে ভাল। শনিবার ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইন সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন।
‘ওয়ার্ল্ড ওর্মিটার’ রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা অল্প। মাত্র ৭০ জন। বিষয়টি স্বস্তি দিলেও মৃত্যুর হার কিন্তু অনেক দেশের চেয়ে বেশি, ১১.৪৩% শতাংশ। হিসেব করলে দেখা যায় করোনায় মৃত্যুর হারে ইটালির পরেই বাংলাদেশ।
শনিবার করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন প্রেস বিবৃতি থেকে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে করোনায় এই পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৯ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ জন আর এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩০ জন। অর্থাৎ, দেশে প্রতি ১০০ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর মধ্যে প্রায় সাড়ে ১১ জন মারা যাচ্ছেন! যা ভাইরাসটির উৎপত্তি স্থল চিনের চেয়েও অনেক বেশি। ওয়ার্ল্ড ওর্মিটার বলছে, চিনে করোনায় মৃত্যুর হার ৪.০৪%। বাংলাদেশের সামনে আছে কেবল মৃত্যুপুরী বনে যাওয়া ইটালি (১২.২৫%), যদিও পার্থক্য খুবই সামান্য। আরেক মৃত্যুপুরী স্পেনের হারও বাংলাদেশের চেয়ে কম (৯.৩৯%)। করোনার নতুন আবাস আমেরিকায় অনেকে আক্রান্ত হলেও মৃত্যুহার খুবই কম (২.৬৭%)। এশিয়ার দুই দেশ দক্ষিণ কোরিয়া এবং মালয়েশিয়াতেও মৃত্যু হার যৎসামান্য, যথাক্রমে ১.৭৪ % ও ১.৫৯%। প্রতিবেশী ভারতে (২.৭৯%) আর পাকিস্তানে (১.৪৮%) তুলনামূলকভাবে মৃত্যুহার অনেক কম।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে করোনায় আরও ২ জনের মৃত্যু, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮]
অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ শ্রীলঙ্কায় মৃত্যুহার ৩.১৪%। বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তদের মিছিল দিন দিন যেমন বাড়ছে, তেমনি মৃত্যুহারও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে। প্রশাসন থেকে সতর্ক করে বলা হচ্ছে, নিজের এবং নিজ পরিবারের কথা চিন্তা করে সবাইকে সচেতন হতে হবে। জনসমাগম এবং শারীরিক দূরত্ব যথাসম্ভব বজায় রাখতে হবে, সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং জীবাণুমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
The post করোনায় মৃত্যুহারে ইটালির পরেই বাংলাদেশ, বলছে আন্তর্জাতিক সমীক্ষা appeared first on Sangbad Pratidin.