সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অস্বস্তি আরও বাড়ল ঋণের ভারে জর্জরিত অনিল আম্বানির (Anil Ambani)। তাঁর তিন সংস্থা রিলায়েন্স কমিউনিকেশন, রিলায়েন্স টেলিকম ও রিলায়েন্স ইনফ্রাটেলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টকে দিল্লি হাই কোর্টে (Delhi High Court) ‘জালিয়াতি’ (Fraud) হিসেবে চিহ্নিত করল স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI)। এর ফলে এবিষয়ে সিবিআই তদন্তের সম্ভাবনা জোরাল হল। আদালত এসবিআইকে ওই অ্যাকাউন্টগুলির স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার ২০১৬ সালের এক সার্কুলারকে চ্যালেঞ্জ করে রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের প্রাক্তন ডিরেক্টর পুনীত গর্গ হাই কোর্টে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিচারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে এড়িয়ে গিয়ে অন্য পক্ষের কথা না শুনেই অ্যাকাউন্টগুলিকে ‘জালিয়াতি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বুধবার এবিষয়ে এসবিআই আদালতকে জানিয়েছে, অডিটের সময় তহবিল তছরূপ ও অন্যান্য অনিয়মের স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে তারা।
[আরও পড়ুন: ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের প্রচার করেছেন মোদি’, আত্মজীবনীতে কটাক্ষ প্রণববাবুর]
রিজার্ভ ব্যাংকের নিয়ম হল, কোনও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অনাদায়ী ঋণ দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে থাকলে তা ‘নন পারফর্মিং অ্যাসেট’ বলে ধরা হবে। এরপর ব্যাংক সেই অ্যাকাউন্টগুলির ফরেনসিক অডিট করে। যদি অডিটে তহবিল তছরুপ, বেআইনি লেনদেনের মতো বিষয় ধরা পড়ে তাহলে সেই অ্যাকাউন্টকে ‘জালিয়াতি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এবং এক সপ্তাহের মধ্যে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়াকে তা জানাতে হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, জালিয়াতির পরিমাণ ১ কোটি টাকার বেশি হলে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানাতে পারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। যদি তা ১ কোটির কম হয়, সেক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশ তদন্ত করে। তবে আরবিআইকে জানানোর এক মাসের মধ্যেই সিবিআই বা পুলিশকে অভিযোগ জানাতে হয়। এদিন আদালত ব্যাংককে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার কথা বললেও, ব্যাংক চাইলে কোনও অ্যাকাউন্টকে ‘জালিয়াতি’ ঘোষণার পরে তা নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারে। রিলায়েন্সের তরফে এখনও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের লাভ জেহাদ বিরোধী আইন কি আদৌ বৈধ? খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট]
একসময় বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি থাকা অনিল আম্বানি এই মুহূর্তে দেউলিয়া। তাঁদের আরকম-এর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, রিলায়েন্স কমিউনিকেশন, রিলায়েন্স টেলিকম ও রিলায়েন্স ইনফ্রাটেলের ঋণ যথাক্রমে ৪৯ হাজার কোটি, ২৪ হাজার কোটি ও ১২ হাজার কোটি টাকা। এই বিপুল ঋণের ভারে জর্জরিত অনিল কয়েক মাস আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে তাঁর তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও সম্পত্তি নেই। জীবনধারণের জন্যও তিনি স্ত্রী-সন্তানের উপর নির্ভরশীল।