শেখর চন্দ্র, আসানসোল: পুরনো শত্রুতার জেরে তৃণমূল নেতার নাম ও স্ট্যাম্প ব্যবহার করে সিবিআই আদালতের বিচারককে হুমকি চিঠি পাঠিয়েছিলেন আদালতের হেডক্লার্ক। শুধু তাই নয়,তৃণমূল নেতা তথা আইনজীবী সেজে এবং তাঁর ভুয়ো পরিচয় বানিয়ে আদালতে আগাম জামিন নিতে এসেছিলেন অভিযুক্ত। সোমবার আসানসোলে আসতেই পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে। মঙ্গলবার ধৃতকে আসানসোল আদালতে তোলা হলে দশদিন পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। সেই আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক।
পুরানো শত্রুতার জেরেই পূর্ব বর্ধমানের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের হেডক্লার্ক তথা তৃণমূল নেতা বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নাম করে আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীকে হুমকি চিঠি লিখে পাঠিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের আইনজীবী সুদীপ্ত রায়। মোবাইলের সূত্র ধরে আসানসোল বিএনআর মোড় থেকে সুদীপ্ত রায়কে গ্রেপ্তার করে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ।
[আরও পড়ুন: মিলল রক্ষাকবচ, অভিষেকের শ্যালিকাকে জেরা করতে হবে কলকাতাতেই, ইডিকে নির্দেশ হাই কোর্টের]
সুদীপ্ত তাঁর পুরনো শত্রু বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে ফাঁসাতেই সিবিআই আদালতের বিচারককে হুমকির চিঠি পাঠিয়েছিলেন স্পিড পোস্টে। শুধু তাই নয়, আসানসোল জেলাশাসকের কাছে বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একটি আরটিআই মামলাও করেন। কয়েকদিন আগেই বাপ্পাকে হুমকিও দিয়েছিলেন ধৃত আইনজীবী। তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার আসানসোল আদালতে এসে ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে সুদীপ্তর হুমকির কথা জানান বাপ্পা। তারপরেই শুরু হয় তদন্ত। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সেই তদন্ত শুরু করে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি ওয়েস্ট অভিষেক মোদি জানান,বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নামে নকল পরিচয় পত্র (আধার কার্ড) বানিয়ে সোমবার আসানসোল আদালতে আগাম জামিন নিতে এসেছিলেন সুদীপ্ত রায়। এবং এই নকল পরিচয় পত্র তৈরি করার জন্য বর্ধমানের এক মহুরির সাহায্য নেয় সুদীপ্ত। বিচারককে হুমকি চিঠির ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই বর্ধমান আদালতে বসাও বন্ধ করে দেন সুদীপ্ত। এই ঘটনায় আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও দক্ষিণ থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। এখন পুলিশ তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালাতে চায়। কী কারনে এই হুমকি চিঠি বিচারককে লিখেছিল সুদীপ্ত? বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুধুই ব্যক্তি শত্রুতা নাকি অন্য কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।