সুকুমার সরকার, ঢাকা: স্বামী সিনেমার নায়ক, আর তিনি বাস্তবের ‘ওয়ান্ডার উওম্যান’। নিজের উপস্থিত বুদ্ধির জোরেই বিমানের ২৯৭ জন যাত্রীর প্রাণ বাঁচালেন বাংলাদেশি তারকা ফিরদৌসের (Ferdous Ahmed) পাইলট স্ত্রী তানিয়া রেজা। তাঁর এই বিচক্ষণতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষ।
বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়ক ফিরদৌস। পশ্চিমবঙ্গেও তাঁর বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। ফিরদৌসের স্ত্রী তানিয়া বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন দক্ষ পাইলট। গত শনিবার (২০ জানুয়ারি) বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার বিমান ‘অচিন পাখি’ আকাশে ওড়ান তিনি। সব কিছু ঠিকঠাকভাবেই চলছিল। ঘণ্টাখানেক চলার পর বিমানটি ভারতের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। এর পরই দেখা যায় বিপত্তি।
ককপিটের কাচে (উইন্ডশিল্ড) ফাটল চোখে পড়ে পাইলটের। বিপদ আঁচ করেই এয়ারট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তানিয়া ও তাঁর টিম। বিমানটি ঢাকায় ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উড়ান শুরু হওয়ার প্রায় দুঘণ্টা পর বিমানটি ঢাকায় ফেরে। নিরাপদেই বিমানটি ল্যান্ড করেন তানিয়া। পরে ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের অন্য ফ্লাইটে গন্তব্যে পৌঁছানো হয়।
[আরও পড়ুন: অশুচি মিলনে বাড়ছে জরায়ুমুখের ক্যানসার? কীভাবে হবে রক্ষা? জানালেন বিশেষজ্ঞ ]
বাংলাদেশের আধিকারিকদের বক্তব্য, বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ ‘অচিন পাখি’ ঢাকা থেকে ওড়ার আগে নিয়ম অনুযায়ী চেক করা হয়, তখন সবকিছু ঠিকঠাক পেয়েই উড়ানের অনুমতি দেওয়া হয়। অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উইন্ডশিল্ড বা কাচে ফাটল ধরলে বা ভেঙে গেলে উড়োজাহাজের ভেতরে বাতাসের চাপ কমে যেতে পারে। এতে সেটি ভারসাম্যহীন হয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে। তবে এমন ঘটনা নতুন নয়।
এর আগেও গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিমানের বোয়িং ৭৩৭-এর ককপিটের উইন্ডশিল্ড ফেটে গেলে সেটিকে মালয়েশিয়ায় গ্রাউন্ডেড করা হয়। ওই বছরের আগস্টে কাতারের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আরেকটি বোয়িং ড্রিমলাইনার মাঝ আকাশে একই সমস্যার মুখোমুখি হয়। নিরাপদেই সেটিকে ভারতের আকাশসীমা থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি যুক্ত হয়। তখন এর নাম দেওয়া হয় ‘অচিন পাখি’। কেনার বেশ কয়েকদিন পরে বোয়িংয়ের উড়ানের পালা শুরু হয়। এত অল্প সময়ের মধ্যে অত্যাধুনিক এই মডেলের উড়োজাহাজে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বড় প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।