‘মন্দার’ সিরিজে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। এবার হইচই প্ল্যাটফর্মে দেখা যাচ্ছে ‘রক্তবিলাপ’। সিরিজের মুক্তির আগে বিদিশা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্ত আড্ডায় অভিনেত্রী সোহিনী সরকার (Sohini Sarkar)। কাজ, সম্পর্ক থেকে থিয়েটার, সমস্ত কিছু নিয়ে অকপট তারকা।
‘মন্দার’-এর সাফল্যের পর নতুন ওয়েব সিরিজ ‘রক্তবিলাপ’। নতুন কাজ কি পুরনো কাজকে ছাপিয়ে যেতে পারবে?
‘রক্তবিলাপ’ (Rawkto Bilaap) খুব চেনা ছকের একটা গল্প। ‘হরর সাইকো থ্রিলার’। এবার সেটা দর্শকের আশাপূরণ করতে পারবে কি না সেটা বলার জায়গাতে আমি নেই। সাধারণত যে কোনও কাজ করার পর সেটা নিয়ে আমি ভাবি না। যখন সেটে অভিনয় করছি তখনই যা ভাবনা- চিন্তা করি। তারপর সেটা নিয়ে আমার কোনও এক্সপেকটেশন থাকে না। যদি ভাল হয়, তাহলে ভালই লাগে। কিন্তু কাজ ভাল হবে কি না সেটা শুধু অভিনেতার হাতে থাকে না।
একটা ভাল কাজ হলে এক্সপেকটেশন বেড়ে যায়।
স্ক্রিপ্ট নিয়ে বাছবিচার করেন না?
হ্যাঁ, আমি বেছেই কাজ করার চেষ্টা করি। ধরা যাক আমার লাস্ট ভাল ছবি রিলিজ ‘ভিঞ্চিদা’। কিন্তু তেমন স্ক্রিপ্ট সবসময় আসবে এমনটা হয় না। ২০১৭-১৮-য় যেমন বছরে তিন-চারটে ভাল রিলিজ ছিল। ‘ভিঞ্চিদা’-র পর সাহিত্য নির্ভর গল্প অবলম্বনে একটি ছবি করি। স্ক্রিপ্ট এবং আইডিয়া প্রাথমিকভাবে খুবই ভাল লেগেছিল। কিন্তু কাজটা করতে গিয়ে বুঝি প্রোজেক্টটা ভাল হচ্ছে না। ফলে অভিনেতার হাতে অভিনয়টুকু ছাড়া বাকিটা থাকে না। আর সব প্রোজেক্টকে প্রথমেই না বলা যায় না। বেনিফিট অফ ডাউট দিতেই হয়। কারণ অনেকগুলো দিক ভাবার আছে। বেশ কিছু ছবি তৈরি হয়ে আটকে আছে। রিলিজ নেই। তখন কিন্তু মাঝারি মানের কাজও করে ফেলতে হয় ব্যালান্সটা বজায় রাখতে গিয়ে। আপনার নতুন বছরের শুরুটা
কেমন হল? কাজ আর বেড়ানোর ছবি দেখছি।
হ্যাঁ, রণ দার্জিলিংয়ে শুটে গিয়েছিল, আমিও সেই সময় গিয়েছিলাম। এখন তো দেখছি ‘ট্রাভেলার’ হিসাবে আমার নাম হয়ে গিয়েছে। তবে গত বছরের শেষ আর এই বছরের শুরুটা খুব ভাল নয়। রণ’র মামা মারা গেলেন ১ তারিখ। পারিবারিক একটা ক্ষতি তো বটেই। এখন অনেকটা কাটিয়ে উঠেছি।
[আরও পড়ুন: ‘কমরেডের মেয়ের এই হাল!’, গোয়ার সৈকতে বিকিনি পরা ঊষসীকে দেখে কটাক্ষ নেটিজেনদের]
আপনি থিয়েটার এবং সিনেমার কাজ পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন। থিয়েটারের তাগিদটা কোন জায়গা থেকে আসে। সময় দিতে পারছেন?
২০০৮ সালের পর থেকে আমি টানা থিয়েটার এবং সিনেমার কাজ করেছি। অনেকেই সেটা জানেন না। ‘মহাভারত ২.০’ বা ‘অথৈ’ দেখে ভাবে এটাই আমার থিয়েটারে হাতেখড়ি। আমি এর আগে বহু ছোট-ছোট দলের সঙ্গে কাজ করেছি। তাদের হয়তো প্রচার নেই। ‘চেতনা’-র সঙ্গে কাজ করেছি। আর সময় বের করাটা খুব বড় ফ্যাক্টর নয়। থিয়েটার করলে যেটা হয় অভিনেতা হিসাবে নিজেকে আবিষ্কার করার একটা সুযোগ তৈরি হয়। ‘মহাভারত’ করতে করতে একটা প্যাটার্ন সেট হয়ে গিয়েছিল। লাস্ট ‘শো’-তে আমার মনে হল এই প্যাটার্নটা আমি ভাঙব। সেটা লাইভ করতে পেরে যে অনুভূতিটা হল সেটা বলে বোঝানো যাবে না। সেই আবিষ্কারের অপেক্ষাতেই থাকি।
আপনি এখন যে দু’টো নাটক করছেন তাতে ‘মলাটচরিত্র’ নন। সাধারণত স্টারেরা তেমন চরিত্র ছাড়া থিয়েটার করতে চান না।
থিয়েটার তো আমি চর্চার জন্য করি। একেবারে মলাটচরিত্র ছাড়া করব না– এই মন নিয়ে তো থিয়েটার করতে আসিনি। সেটা করার জন্য অন্য একটা ‘মন’ দরকার যার সঙ্গে ‘নাম-যশ’ জড়িয়ে, আমি সেই মন নিয়ে থিয়েটার করি না।
নতুন কী কাজ আছে?
মে মাসে বেশ কিছু কাজের কথা হচ্ছে, দেখা যাক।
শুনছি আবিরকে নিয়ে নতুন ‘ব্যোমকেশ’ হচ্ছে। সেখানে আপনি আবার ‘সত্যবতী’?
(হাসি)… এটার আমি কিছুই জানি না।
‘সোহিনী-অনির্বাণ’ নাকি ‘সোহিনী-ঋত্বিক’–পর্দায় কোন জুটি বেশি হিট? আবার তো ঋত্বিকের সঙ্গে কাজ করতে চলেছেন!
এই রে, এটা তো দর্শক বলবে! তবে ঋত্বিকদার সঙ্গে আমি অনেক বেশি কাজ করেছি। অনির্বাণের সঙ্গে টানা সিরিয়ালে কাজ করেছি, তবে কাজের সংখ্যা ঋত্বিকদার সঙ্গে বেশি। সিনেমার জন্য প্রথম ক্যামেরায় দাঁড়ানো ঋত্বিকদার সঙ্গে। ঋত্বিকদার সঙ্গে কাজ করার অনেক স্মৃতি রয়েছে।
নতুন কী রিলিজ করবে? আর নতুন কোনও কাজ OTT-র জন্য?
‘আগন্তুক’ হয়তো ওটিটি-তে রিলিজ করবে। ওটার অপেক্ষায় আছি। আর Zee5 প্ল্যাটফর্মের জন্য একটা ওয়েব সিরিজ হতে পারে।
শেষ প্রশ্ন, বিয়েটা কবে করছেন?
এটা রণ বলতে পারবে। আমাকে যে এই প্রশ্ন করছে আমি ওর দিকেই ঠেলে দিচ্ছি। ও যে খুব ভাল জানে বলে মনে হয় না। আসলে কী বলো তো, আমার জীবনে যা ভাল কিছু ঘটেছে সবটাই প্ল্যান ছাড়া। আমার ধারণা বিয়েটাও সেইভাবেই হবে। আর বিয়ের প্রস্তুতি নিতে আজকাল বেশি দিন লাগে না। ওটাও আনপ্ল্যান্ড হঠাৎ করেই হবে। আর ডেস্টিনেশন ওয়েডিং তো করব না! অত টাকা নেই! বরং যে টাকা আছে, এই প্যানডেমিকে সেটা লাক্সারি ওয়েডিং-এ নষ্ট করতে চাই না।