সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে আদানি গ্রুপ। আদানি পাওয়ারের দুটি ইউনিট পূর্ণ ক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে গত ১৩ আগস্ট দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এতদিন প্রথম ইউনিটের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিচ্ছিল আদানি। বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে তৎকালীন হাসিনা সরকার চুক্তি করেছিল আদানি গ্রুপের সঙ্গে। কিন্তু চলতি মাসেই পতন ঘটেছে আওয়ামি লিগ সরকারের। তবে এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রেখেছে আদানি।
ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় নির্মিত আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৩ আগস্ট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে দ্বিতীয় ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরে আসে। আজ মঙ্গলবার আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়।
[আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার আসতেই উঠছে নিষেধাজ্ঞা! ফের স্বমহিমায় ফিরবে জামাত?]
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য গোড্ডায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে আদানি। বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৭ সালে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে পিডিবি। চুক্তি অনুযায়ী আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ কিনবে পিডিবি। গত বছরের এপ্রিল থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে তারা। চুক্তি অনুযায়ী পিডিবির চাহিদা অনুসারে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে আদানি। যা দিতে না পারলে আদানিকে জরিমানা দিতে হবে। আবার বিদ্যুৎ না নিলেও আদানিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া (ক্যাপাসিটি পেমেন্ট) পরিশোধ করতে হবে পিডিবিকে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর হয়ে। প্রশ্ন উঠছে হাসিনার প্রস্থানে ধাক্কা খাবে ব্যবসা? নজর থাকবে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থানের দিকে।
এদিকে, প্রায় ৮০ কোটি ডলার বকেয়া থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আদানি। এছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহকারী পাঁচ ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের কাছে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বকেয়া পাওনা রয়েছে। মঙ্গলবার এক রিপোর্টে এই তথ্য জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস। সেখানে বলা হয়েছে, দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে এত টাকা বকেয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়নি। তবে এখন তারা বলছে, এমনভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে না। কেন না তাদের কোম্পানিকে অন্য অংশীদারদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। বকেয়া এই অর্থের মধ্যে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন পাবে আদানি পাওয়ার।