ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বহরমপুরে হার। বাংলায় সার্বিকভাবে খারাপ ফল। একার সিদ্ধান্তে বামেদের সঙ্গে জোট করে ভরাডুবি। এত কিছু সত্ত্বেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে না কংগ্রেসের (Congress) সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। এমনকী, অধীরকে অন্য কোনও রাজ্য থেকে জিতিয়ে রাজ্যসভায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে, সেই ইঙ্গিতও নাকি মিলেছে এআইসিসির তরফে।
লোকসভার ফলপ্রকাশের পর গত ৮ জুন দিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ডাকা হয় অধীরকে। বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ কংগ্রেসের কর্মসমিতির সদস্য। সূত্রের খবর, দিল্লির ওই বৈঠকে গিয়ে অধীর প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে আশ্বস্ত করে জানিয়ে দেয়, এখনই ইস্তফার ব্যাপারে ভাবার দরকার নেই। লোকসভা ভোটের রাজ্যওয়াড়ি ফল বিশ্লেষণ করে হারের কারণগুলি চিহ্নিত করতে আলাদা কমিটি গড়বেন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে (Mallikarjun Kharge)। যেসব রাজ্যে খারাপ ফল হয়েছে, সেই রাজ্যগুলিতে ভোটের ফল পর্যালোচনার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
[আরও পড়ুন: হিজাব বিতর্কের পর বাংলায় তিলক-তরজা! স্কুলের সামনে বিক্ষোভ ‘সনাতনী’দের]
প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রের খবর, বঙ্গে ভোট বিপর্যয়ের পর্যালোচনা করতে আগামী ২১ জুন মৌলালি যুব কেন্দ্র বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে প্রদেশ নেতৃত্বের পাশাপাশি থাকবেন দলের প্রার্থীরা। অধীর নিজেও উপস্থিত থাকবেন। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর সেই পর্যালোচনা বৈঠক নিয়ে রিপোর্ট দেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। তার আগে প্রদেশ নেতৃত্বে বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, অধীরকে দিল্লির রাজনীতিতে চাইছে এআইসিসির (AICC) একাংশ। ৯ জুন কংগ্রেস কর্মসমিতির বৈঠকের পরই নাকি অধীরকে দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, "আপনি দিল্লির বাংলো ছাড়বেন না।" সাংসদ হিসাবে এতদিন দিল্লিতে সরকারি বাংলো পেতেন অধীর। বহরমপুরে হারের পর অধীরবাবুর (Adhir Chowdhury) আর সেই বাংলো পাওয়ার কথা নয়। নিয়ম অনুযায়ী, দ্রুতই ওই দিল্লির বাংলো খালি করতে হবে অধীরকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নাকি তাঁকে বাংলো না ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: বিনামূল্যে আধার সংশোধনের সময়সীমা ফের বাড়ল, জানুন খুঁটিনাটি]
স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা, তবে কি প্রদেশ সভাপতিকে অন্য কোনও রাজ্য থেকে জিতিয়ে রাজ্যসভায় নিয়ে যেতে চাইছে কংগ্রেস? নাকি কোনও কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হবে তাঁকে? সামনেই রাজ্যসভার ১০ আসনে নির্বাচন। এর মধ্যে জোটসঙ্গীদের সহায়তা পেলে ২-৩টি আসন জিততে পারে কংগ্রেস। সেই আসনগুলিতে কি অধীরকে ভাবা হচ্ছে? নাকি রাহুল গান্ধী কেরলের ওয়ানড় থেকে পদত্যাগ করলে, সেই আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হবে অধীরকে? সবটাই এখনও জল্পনার স্তরে। আপাতত খবর, অধীরকে দিল্লির বাংলো ছাড়তে বারণ করছে কংগ্রেস।