বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট। জ্যোতি বসু। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কখনই কাউকে মুখ করে ভোটে যায়নি বামেরা। এবারও তার অন্যথা হবে না। স্পষ্ট করে দিল আলিমুদ্দিন। অধীর চৌধুরিকে (Adhir Ranjan Chwdhury) মুখ করে নির্বাচনে যাওয়া উচিৎ বলে কংগ্রেসের একটা অংশ দাবি করলেও তা কার্যত ফুৎকারে উডিয়ে দিল সিপিএম। মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প মুখ বিজেপি এখনও তুলে ধরতে ব্যর্থ। সেক্ষেত্রে অধীর চৌধুরিকে মুখ করে ভোটে লড়াই করলে সুফল মিলবে বলেই ধারনা বিধানভবনের।
জোটের আসনরফা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। কোন দল ক’টি আসনে লড়বে তা নিয়েও আলোচনা হয়নি। জোটের আলোচনা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রদেশ সভাপতি। যদিও তাতে আলিমুদ্দিনের সম্মতি সেভাবে মেলেনি। এরই মধ্যে অধীর চৌধুরিকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করে ভোটে যাবে জোট এমন প্রকাশ্যে এমন বক্তব্য রেখেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের দু-একজন নেতা। তাতেই জোটে জটিলতা বাড়তে শুরু করেছে। কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্বের এহেন মন্তব্য সিপিএম (CPM) যে ভাল চোখে দেখছে না তা বলাইবাহুল্য।
[আরও পড়ুন : দিলীপ ঘোষকে তৃণমূলে যোগের আহ্বান জানালেন অনুব্রত, দিলেন একটি শর্তও]
এই প্রসঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী জানান, বামফ্রন্ট কোনওদিনই কাউকে মুখ করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। জ্যোতি বসু বা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন এটা মানুষ ধরে নিত। কিন্তু পার্টি বা ফ্রন্টের তরফে কাউকেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করে প্রচার করা হত না। তাঁর মতে, ভারতে যেহেতু ‘প্রেসিডেন্সিয়াল’ নির্বাচন হয় না তাই মুখ করে ভোটে যাওয়াটাও ঠিক নয়। অনেক দল কাউকে কাউকে মুখ করে ভোটে লড়লেও বামেরা করে না বলে দাবি সুজনের। তবে কংগ্রেসের যে অংশ অধীর চৌধুরির নাম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে প্রচার করছে তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা। জোটের কর্মসূচি বা আসনরফা নিয়ে দু’পক্ষের যে নেতারা আলোচনা চালাচ্ছেন তাঁদের মধ্যে এঁরা পড়েন না বলেও দাবি করেন তিনি।
তবে সুজনবাবুর যুক্তি ও দাবির সঙ্গে একমত নয় বিধানভবন। তাঁদের যুক্তি, অধীর সংসদে বিরোধী দলনেতা। ধারে ও ভারে মমতার বিকল্প হতেই পারেন। তাই বামেরা অধীরের পায়ে বল দিলে গোল পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে বেল জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার। জোটের পরবর্তী বৈঠকে কংগ্রেসের তরফে এমন প্রস্তাব বামেদের কাছে রাখা হতে পারে বলে তাঁর বক্তব্য থেকেই ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি জানান, কংগ্রেসের সমস্থ গণফ্রন্টের মধ্য থেকেই প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে এই দাবি রাখা হয়েছে।