সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবসে তাঁকে অসম্মান করা হয়েছে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল। দুর্গাপুরের (Durgapur) প্রাণ কেন্দ্র সিটি সেন্টারে এসবিএসটিসি বাস স্ট্যান্ডে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) মূর্তির মাথার ঠিক উপরে বিরাজ করছে বিশাল জুতোর বিজ্ঞাপন! কবিকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিষয়টি নজরে পড়তেই এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করল ‘দুর্গাপুর নাগরিক মঞ্চ’। চাপে পড়ে বিজ্ঞাপন ঢেকে দিল সংস্থা। বিজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে দুর্গাপুর নগর নিগম।
রবিবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। এদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিশ্বকবিকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। একইভাবে দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারে কবির মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাতে যেতেই চক্ষু চড়কগাছ! দেখা যায়, কবিগুরুর মূর্তির ঠিক পিছনেই দুর্গাপুর নগর নিগমের বিজ্ঞাপন স্তম্ভ। সেই স্তম্ভে জ্বলজ্বল করছে বিশাল জুতোর ছবি-সহ বিজ্ঞাপন। বিশ্বকবির ৮০ তম প্রয়াণ দিবসে তাঁকে অসম্মানের প্রতিবাদে গর্জে ওঠে দুর্গাপুর। শুধু এই অপমানকর বিজ্ঞাপনই নয়, কবির মূর্তির সামনেই একটি রেস্তরাঁ নিয়েও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে মানুষের। অভিযোগ, কবির মূর্তির সামনেই ফেলা হয় নষ্ট খাবার। বৃষ্টির দিনে নিজেদের ব্যবসায়িক সুবিধার্থে রেস্তরাঁ মালিক কবির মূর্তি ও সংলগ্ন এলাকায় প্লাস্টিকে আচ্ছাদন লাগিয়ে দেন। রবিবার সকালে ‘দুর্গাপুর নাগরিক মঞ্চে’র পক্ষ থেকে কবির মূর্তিতে মাল্যদান করার পরই এই ঘটনার প্রতিবাদ করা হয়।
[আরও পড়ুন: চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ, দেহ নিয়ে বিক্ষোভ পরিবারের, অগ্নিগর্ভ মালদহ]
মঞ্চের পক্ষ থেকে দুর্গাপুরের (Durgapur) বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী রণজিৎ গুহ জানান, “এইভাবে কবির অপমান সাধারণ মানুষ সহ্য করতে পারবে না। তাই প্রতিবাদ করেছি। মূর্তির সামনের রেস্তরাঁও যাতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তা নিয়ে চিঠি দিয়েছি এডিডিএকে।” দুপুরে সেখানে বিক্ষোভ দেখায় ‘বাংলা পক্ষ’। পরপর বিক্ষোভে চাপে পড়ে বিজ্ঞাপন এজেন্সি জুতোর বিজ্ঞাপন কালো পলিথিন দিয়ে কোনওরকমে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করে। আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার নিন্দা করে দুর্গাপুর নগর নিগমের সমালোচনা করে বলেন,” যারাই করেছে এটা ঠিক করেনি। বিজ্ঞাপন দিতেই পারে। তবে তা মানানসই জায়গায় দেওয়া উচিত।” ঘটনার নিন্দা করেছেন দুর্গাপুরের ডেপুটি মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ও। তিনি জানান, “বিষয়টি শুনেছি। দুঃখজনক ঘটনা। কার তদারকিতে নিগমের হোর্ডিং বিভাগ এই বিজ্ঞাপন ওখানে বসিয়েছে তা জানব। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সামনের রেস্তরাঁ নিয়েও বহু অভিযোগ এসেছে। মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হবে।”