সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এসিএল ২-র ম্যাচ খেলতে ইরানের তাবরিজে যায়নি মোহনবাগান। সেখানে ট্রাক্টর এফসি-র সঙ্গে খেলার কথা ছিল দিমিত্রিদের। সেদেশের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ফুটবলারের নিরাপত্তাই মূল কারণ হিসেবে দেখিয়েছিল সবুজ-মেরুন শিবির। এবার উত্তর এল এএফসি-র তরফ থেকে। তাদের নিয়ম অনুযায়ী জানিয়ে দেওয়া হল, এসিএল ২ থেকে মোহনবাগান সরে দাঁড়িয়েছে। সেই অনুযায়ী তাদের আগের সমস্ত পয়েন্ট ও গোলও কেটে নেওয়া হয়েছে।
এসিএল ২-এ মোহনবাগানের প্রথম ম্যাচ ছিল রাভশানের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচ ড্র হয়। ঘরের মাঠের ম্যাচের পর ইরানে ট্রাক্টরের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার মাঝেই উত্তপ্ত হয়ে যায় সেদেশের পরিস্থিতি। ম্যাচের আগের দিনই ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে কয়েকশো ব্যালেস্টিক মিসাইল ছুঁড়ল ইরান। দেখতে গেলে, ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধই ঘোষণা হয়ে গেল একপ্রকার। স্বাভাবিকভাবে এই পরিস্থিতিতে ইরানে যাওয়া কোনওভাবেই নিরাপদ নয়, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই নিয়ে এএফসি-কে আবেদনও করেছিল মোহনবাগান। কিন্তু তার যে উত্তর এল, তাতে সবুজ-মেরুনের এসিএল ২-র স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। তাবরিজে তারা উপস্থিত না থাকায়, ৫.২ নিয়ম দ্বারা ধরে নেওয়া হয়েছে মোহনবাগান এসিএল ২ থেকে নাম প্রত্যাহার করেছে। ফলে তাদের ঘোষণা অনুযায়ী, এবছর এসিএল ২-র আর কোনও ম্যাচে নামতে পারবে না মোলিনার দল।
আগের ম্যাচে মোহনবাগান যে এক পয়েন্ট পেয়েছে, সেটাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতিযোগিতার ৫.৬ নিয়ম অনুযায়ী এসিএল-২ মোহনবাগানের আর কোনও উপস্থিতি নেই। ফলে গ্রুপটি এখন তিন দলের বলে ধরা হচ্ছে। মোহনবাগানের তরফ থেকে যুক্তি ছিল, ইরানে যুদ্ধের আবহে যাওয়া সম্ভব ছিল না। সেই আশঙ্কা সত্যিও হয়েছে। কিন্তু জানা যাচ্ছে, এএফসি তরফের যুক্তি, সবুজ-মেরুনের যেদিন দুপুরে উপস্থিত থাকার কথা, তখনও সেই আশঙ্কা বাস্তব রূপ নেয়নি। সাধারণত, ম্যাচের দুদিন আগে সেই দেশে গিয়ে রিপোর্ট করতে হয়। তার পরও কেন মোহনবাগান এএফসি-র সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়নি, সেই যুক্তি তোলা হচ্ছে।
তবে এই প্রসঙ্গে আরও একটি কথা উঠে আসছে। ইরানের ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট মেহদি তাজ এএফসি-র ছজন ভাইস প্রেসিডেন্টদের মধ্যে একজন। তিনিও মোহনবাগানের ইরানে না যাওয়া নিয়ে কয়েকদিন আগে মুখ খুলেছিলেন। মনে করা হচ্ছে, এখানে তাঁর প্রভাবও থাকতে পারে।
মোহনবাগানের তরফ থেকে বারবার ফুটবলারদের নিরাপত্তার কথায় জোর দেওয়া হয়েছে। সবুজ-মেরুনের ৩৫ জন ফুটবলার চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা ইরানে যেতে চান না। সেই আশঙ্কা সত্যিও হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে মোহনবাগানের ইরানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক বলেই মনে করছে ফুটবলমহল। তবে এএফসি-র সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট কমিটির অধীনে যাবে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে কি সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসতে পারে? মোহনবাগান ইতিমধ্যেই আইনি পরামর্শ নিচ্ছে বলেই খবর। কমিটিতে যদি ডাকা হয়, সেখানে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরবে তারা।