shono
Advertisement

কম্বলে জড়ানো শয়ে শয়ে মৃতদেহ, বাড়ি বলতে শুধু পাথরের ঢিপি! ভূমিকম্পে আফগানিস্তান যেন নরক

আফগানিস্তানে মৃত অন্তত ৯৫০ জন।
Posted: 03:47 PM Jun 22, 2022Updated: 03:57 PM Jun 22, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কম্বলে জড়ানো শয়ে শয়ে মৃতদেহ। বাড়ি বলতে শুধু দেখা যাচ্ছে পাথরের ঢিপি। ভূমিকম্পের কম্পনে আফগানিস্তান যেন নরকে পরিণত হয়েছে। ২০০২ সালের পর এই প্রথম রিখটার স্কেলে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পের সাক্ষী থাকল দেশ। ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা প্রায় হাজার ছুঁয়ে ফেলেছে। উদ্ধারকাজ শুরু হলেও অনেকেই ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন বলে খবর।

Advertisement

রয়টার্স সূত্রে খবর, আফগান-পাক সীমান্তবর্তী খোস্ত শহর থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরে ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল। পাকতিয়া প্রদেশে ধসে পড়েছে বহু বাড়ি। আফগানিস্তানের দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, এদিন ভোরেই এই ভূমিকম্প হয়েছে। সব মিলিয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের প্রায় ৫০০ কিলোমিটার অঞ্চল ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে। তবে ক্ষতি হয়েছে আফগানিস্তানেরই। তালিবানের বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রকের প্রধান নাসিম হাক্কানি জানাচ্ছে, অধিকাংশ মৃত্যুই হয়েছে পাকতিয়া প্রদেশে।

[আরও পড়ুন: আগ্রাসী ‘ড্রাগন’, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বলয়ে অনুপ্রবেশ ২৯টি চিনা যুদ্ধবিমানের]

আফগান সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হেদায়াতুল্লা পাক্তিন জানাচ্ছেন, আফগানিস্তানের ওই অঞ্চলগুলির সাধারণ মানুষ এতই দরিদ্র, তাঁরা মাটি, পাথর ও অন্যান্য উপাদান জড়ো করেই বাড়ি বানান। পাকা বাড়ি এখানে দুর্লভ। তাই ভূমিকম্পের ধাক্কায় সমস্ত বাড়িই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনিতেই তালিবান আমলে সেদেশের দারিদ্র চরমে পৌঁছেছে। এই অবস্থায় এমন ভূমিকম্পে জনজীবন প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল বলেই মনে করা হচ্ছে।

আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে একর পর এক বাড়ি কার্যত ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। শয়ে শয়ে মৃতদেহ কম্বলে জড়িয়ে রাখা হয়েছে। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দুর্গম জায়গাগুলিতে উদ্ধারকাজ চালানো হলেও তা যে প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই নয়, সেই কথা স্পষ্ট। তালিবান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিক সালাউদ্দিন আয়ুবি জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকতিয়া প্রদেশ। সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫৫ জন। আহত কমপক্ষে ৬০০। খোস্ত প্রদেশে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৫ জনের। আহত বহু। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সেখানে খাবার ও ওষুধ পাঠানো হচ্ছে। তার কথায়, “পাহাড়ের গায়ে অবস্থিত বেশ কয়েকটি গ্রাম অত্যন্ত দুর্গম। সেখানে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আরও সময় লাগবে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।” সবমিলিয়ে, আফগানিস্তানে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯৫০ জনের।

এদিকে, ভূমিকম্পে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে তালিবানের সুপ্রিম কমান্ডার হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদা। তবে বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এহেন বিপুল মাত্রার বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার মতো ক্ষমতা নেই তালিবানের। একইসঙ্গে পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ও বিদেশি ত্রাণের পরিমাণ কমে যাওয়া। এমনিতেও দেশটিতে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। তারউপর ভূমিকম্পের জেরে এবার পরিস্থিতি অত্যন্ত ঘোরাল হয়ে উঠেছে।

রাষ্ট্রসংঘের ‘Office For The Coordination of Humanitarian Affairs’ (UNOCHA) জানিয়েছে, উদ্ধারকাজে আন্তর্জাতিক মঞ্চের কাছে সাহায্য চেয়েছে আফগানিস্তান। ইতিমধ্যে প্রভাবিত এলাকায় উদ্ধারকারী দল পাঠান হয়েছে। তালিবানের তরফে জানানো হয়েছে যে আন্তর্জাতিক ত্রাণ কার্যকে তারা স্বাগত জানাবে।

[আরও পড়ুন: নারী ও শিশু ধর্ষণে জেরবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ! অপরাধ রুখতে জারি জরুরি অবস্থা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement