প্রণব সরকার, আগরতলা: রাস্তার ধারে বসে আছেন। কখনও উদভ্রান্তের মতো এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন, কখনও আবার ফোনে উদ্বিগ্ন হয়ে কথা বলছেন। হয়তো নিজের পরিস্থিতি বোঝাতে চাইছিলেন। তবে ভাষা বোঝার উপায় নেই। কী বলছেন? প্রশ্ন করতেই স্পষ্ট হিন্দি ভাষায় উত্তর দিলেন যুবক। জানালেন আফগানিস্তানের বাসিন্দা তিনি। নাম, আবদুল খান।
আফগানিস্তানে দোকান ছিল আবদুলের। তা থেকে যা রোজগার হত, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ভালভাবেই সংসার চলে যেত। কিন্তু আচমকা সমস্ত কিছু পালটে গেল। দুই দশক পর ফের আফগানিস্তানের (Afghanistan) দখল নিল তালিবানরা। রাস্তায় রাস্তায় তাণ্ডব চালাল বন্দুকধারীরা। প্রাণ ভয়ে দিকবেদিক শূণ্য হয়ে মানুষকে ছুটতে দেখা গেল। যাঁদের ভাগ্য ভাল, তারাই অন্য দেশে পালিয়ে বাঁচতে পেরেছেন, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
[আরও পড়ুন: Afghanistan Crisis: তালিবান সরকার গঠন নিয়ে এবার মুখ খুলল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক]
তবে আবদুল এখনও নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন না। কারণ তিনি অসমে পৌঁছতে পারলেও স্ত্রী-সন্তানরা কোথায় আছেন, সে বিষয়ে কিচ্ছু জানেন না। তাজাকিস্তানের দিকে তাঁদের পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন আবদুল। এখন আর তাঁদের কোনও খোঁজ পাচ্ছেন না।
প্রায় ১৭-১৮ দিন হয়ে গেল ভারতে এসেছেন আবদুল। অসমে এসে ক্রমাগত স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। রাস্তায় বসে হয়তো সেই চেষ্টাই করছিলেন। অসমের লোকজন বেশ ভাল, তাঁদের মধ্যে মানবিকতা রয়েছে, জানালেন আফগানিস্তানের বাসিন্দা। অশান্ত আফগানিস্তানের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথাও শোনা গেল তাঁর মুখে। “কী হচ্ছে তা সারা বিশ্বই দেখছে”, বললেন আফগান যুবক। এখন তাঁর লক্ষ্য স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। আবদুলের এভাবে নগাওয়ের রাস্তার পাশে বসে থাকার খবর পৌঁছায় স্থানীয় থানায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে উদ্ধার করে রূপসী হাট থানার পুলিশ। আপাতত তাঁদের দায়িত্বেই থাকবেন আফগান যুবক থাকবেন বলে খবর।