সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহামারি করোনার সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। এর ফলে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়ছেন ভিনরাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা। গত কয়েকদিন ধরে করোনায় মৃত্যু হওয়ার পাশাপাশি তাঁদের মৃত্যুমিছিলও প্রত্যক্ষ করছেন সবাই। কখন দুর্ঘটনায় তো কখন না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছেন প্রচুর মানুষ। এর মধ্যেই তিনদিন ধরে অভুক্ত অবস্থায় হাঁটার ফলে রাস্তাতেই মৃত্যু হল ষাটোর্দ্ধ এক পরিযায়ী শ্রমিকের। রবিবার ভোরে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কনৌজ জেলায়। মৃত ওই ব্যক্তির নাম বিক্রম।
মৃতের সঙ্গে রাস্তায় হাঁটতে থাকা মানুষদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, মার্চের শেষদিকে লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকে প্রচণ্ড অর্থকষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন বিক্রম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কাজ না থাকায় হাতে অর্থের জোগান কমে যাচ্ছিল। বাধ্য হয়ে শুক্রবার আরও অনেকের সঙ্গে পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে মহারাষ্ট্র থেকে উত্তরপ্রদেশের হারদোই জেলার বাড়িতে ফেরার পরিকল্পনা নেন বিক্রম। সেই অনুযায়ী একটি ট্রাকও ভাড়া করে সবাই মিলে। কিন্তু, সেই ট্রাকে করে কিছুদূর যাওয়ার পরেই রাস্তা আটকায় পুলিশ। পরে হেঁটেই বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা। পায়ে হেঁটে লখনউ থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কনৌজ জেলাতেও পৌঁছে যায়। সেখান থেকে রাত তিনটের সময় সবাই মিলে রওনা দেন হারদোই জেলার উদ্দেশে। কিন্তু, কিছুটা পথ যাওয়ার পরেই অচৈতন্য অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন বিক্রম। কিছুক্ষণ বাদে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
[আরও পড়ুন: ‘পারলে ওঁদের মালপত্র বহন করুন’, পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে রাহুলকে কটাক্ষ অর্থমন্ত্রীর ]
মৃত বিক্রমের পরিবারের এক সদস্য জানান, লকডাউনের জেরে হাতে টাকা ছিল না। তাই সবাই নিজেদের বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমাদের সঙ্গে বিক্রমও আসছিলেন। শুক্রবার যখন মহারাষ্ট্র থেকে রওনা দিয়েছিলাম তখনই উনি শেষবার কিছু খেয়েছিলেন। পকেটে টাকা না থাকায় রাস্তাতে আর কিছু খাননি। রবিবার ভোরে কনৌজ জেলা থেকে হারদৌই যাওয়ার সময় মাথা ঘুরে রাস্তায় পড়ে যাওয়ার জেরে মৃত্যু হয় বিক্রমের।
[আরও পড়ুন: ‘বাড়ি ফিরতে চাই’, উত্তরপ্রদেশের জাতীয় সড়ক আটকে বিক্ষোভে পরিযায়ী শ্রমিকরা]
The post অভুক্ত অবস্থায় তিনদিন ধরে পথচলার ফল, রাস্তাতেই মৃত ষাটোর্দ্ধ পরিযায়ী শ্রমিক appeared first on Sangbad Pratidin.