শম্পালী মৌলিক: এবারের নর্থ আমেরিকান বেঙ্গলি কনফারেন্স ২০২৩ নিয়ে বিতর্ক থামার নয়। চূড়ান্ত অব্যবস্থার কথা জানা গিয়েছে গতকালই। হেনস্তার শিকার হয়েছেন সংগীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তী। রাতে ফেসবুক লাইভে এসে নিজেও সে কথা জানিয়েছেন মার্কিন মুলুক থেকে। তার কিছু পরেই একটু রাতের দিকেই প্রকাশ্যে আসে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীকে (Ajoy Chakrabarty) কীরকম দুর্বিপাকে পড়তে হয়েছে সেই প্রসঙ্গ।
অজয় চক্রবর্তীর মতো প্রবীণ, সম্মাননীয় শিল্পীকে এনএবিসি-র উদ্যোক্তাদের চিঠি দিয়ে জানাতে হয়েছে চূড়ান্ত হেনস্তার কথা। চিঠিতে তাঁর বক্তব্য এইরকম— আমেরিকায় পৌঁছনোর প্রথম দিন থেকে তিনি অপমানিত বোধ করছেন। তাঁর আক্ষেপ, ৭১ বছর বয়সে এসে এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন কেন! এক উদ্যোক্তা তাঁকে প্রায় ৫০ বারেরও বেশি কল করেছিলেন, কিন্তু সে দেশে তাঁর আর দেখা নেই। অনুষ্ঠানের সময়সূচীও ভয়ংকর ছিল। চুক্তি অনুযায়ী যে পারিশ্রমিক তাঁর পাওয়ার কথা ছিল, তখনও তিনি পাননি, সে কথাও লিখেছেন। তাঁর এবং তাঁর সহযোগীদের জন্য যে ঘর বরাদ্দ ছিল, সে-সবও বন্ধ ছিল।
অজয় চক্রবর্তীদের এক-দু’ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করতে হয়। পরে একজন বন্দোবস্ত করেন। লাঞ্চ পান চারটের পরে। উদ্যোক্তা দু’জনের নাম উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, যে একবার কল ব্যাক করার সৌজন্যও তাঁরা দেখাননি। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী পদ্মভূষণ প্রাপ্ত কিংবদন্তী শিল্পী তাঁর এই ব্যবহার প্রাপ্য নয় নিশ্চিতভাবে। তিনি ছাড়া আরও বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী এবং বিশিষ্টজনেরাও নানাভাবে অপ্রীতিকর, অসহ্য পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন এবারের বঙ্গসম্মেলনে। জয়তী চক্রবর্তীকে হোটেল থেকে বিতাড়িত হয়ে আশ্রয় নিতে হয় এক পরিচিতর বাড়ি। সে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সে দেশে বসবাসকারী অনেকেই সরব হয়েছেন। জয়তীও ফেসবুক লাইভে সমস্ত কিছু জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: শ্রাবন্তীর জন্যই জিতুর সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙন? মুখ খুললেন নবনীতা]
নেটিজেনদের তীব্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর হেনস্তা নিয়ে। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় ফেসবুকে স্পষ্ট ভাষায় প্রশ্ন তুলেছেন “এই অসম্মানটুকু পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর প্রাপ্য বুঝি! বাঙালি আর কত নীচে নামবে?” লাজবন্তী রায় ধিক্কার জানিয়েছেন। লিখেছেন, “এনএবিসি সম্পর্কে আগেও এরকম বহু ঘটনা শুনেছি।”
প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, যে এই ঘটনা অত্যন্ত অপমানজনক। লোপামুদ্রা মিত্র ফেসবুকে কারও নাম না করেও লিখেছেন, ‘এরপরও পশ্চিমবাংলার গায়ক-গায়িকা,ব্যান্ড ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের সম্মান রক্ষা করবে না।..’. তাঁর অভিযোগের তীরও এনএবিসির দিকে।
অন্যদিকে গতকালই ‘প্রতিদিন ডিজিটাল’কে কৌশিকী চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, বাবার সঙ্গে তাঁর এ বিষয়ে কথা হয়নি। তবে বঙ্গ সম্মেলনের অব্যবস্থা নতুন নয়। এই জন্যই বিগত আট-নয় বছর তিনি যান না। তাঁর পূর্ব অভিজ্ঞতা ভাল নয়।