সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত এক বছরের বেশি সময় ধরে হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুর। তার রেশ কাটতে না কাটতেই ভয়াবহ বন্যায় দিশেহারা উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। গত কয়েকদিনের অতিভারি বৃষ্টিতে প্রায় ৩৫ হাজার বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে অন্তত ২০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দাবি, ২০ হাজার ৬৩৯ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ১২৫১ জন। খোলা হয়েছে ১৪টি ত্রাণ শিবির।
রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রবল বন্যায় (Flood) চাষবাসের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি জায়গায় জায়গায় ভূমি ধসের জেরে জনজীবন বিপর্যস্ত। রাজ্যের অন্তত ৪৯ জায়গায় ভূমি ধসের খবর পাওয়ায় গিয়েছে। সেনাপতি জেলার সেনাপতি নদীর ব্যাপক জলস্রোতে ভেসে গিয়েছে খাবুংগ কারোংগ গ্রামের এক ডাক্তার। পরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি ১৭ বছরের এক তরুণও জলে ভেসে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও তার দেহ এখনও পাওয়া যায়নি। ইম্ফলের (Imphal) নদী তীরবর্তী এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করা হলেও নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ার বাঁধ ভেঙে বিপুল সংখ্যক চাষের জমি জলের নিচে। আপাতত সব স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে সরকারি কার্যালয়ও।
[আরও পড়ুন: 'আমি জঙ্গি নই’, জামিনের কাতর আর্জি কেজরির, সিবিআইকে নোটিস হাই কোর্টের]
উদ্ধারকারী দল তো বটেই রাজ্য সরকারের তরফে উদ্ধারের কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে পুলিশ, দমকল, স্বাস্থ্য, জল, পিডব্লুডি, সেচ ও বনদপ্তরকেও। এদিকে জানা গিয়েছে, গত ১ জুলাই থেকে ইম্ফল ও তার আশপাশের এলাকায় অতিভারি বৃষ্টির জেরেই এই দুর্ভোগ। তবে সেই বৃষ্টি এখনও থামার কোনও লক্ষণ নেই। শুক্রবার সকাল ৮.৩০ পর্যন্ত ইম্ফলে ১৫.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কাংপোকপিতে ১৮ মিলিমিটার, চুড়াচাঁদপুরে ১৬ মিলিমিটার, বিষ্ণুপুরে ৩২ মিলিমিটার ও তামেংলংগতে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরও অতিভারি বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়েছিল মণিপুর। সেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সেবার ১.২ লক্ষ মানুষ এলাকা ছেড়েছিল। এবারও তেমনই পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন।