শেখর চন্দ্র, আসানসোল: দলের নিচুতলার নেতা ও কর্মীদের ক্ষোভটা এখন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, সোমবার আসানসোলে (Asansol) বৈঠক করতে এসে টের পেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সোমবার আসানসোলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখালেন নেতা ও কর্মীদের একাংশ। দিলীপ ঘোষের সামনেই চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, যারা নির্বাচনের পরে ঘরছাড়া তাঁদের সঙ্গে বৈঠক না করে নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন রাজ্য সভাপতি। এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন জেলা ওবিসি মোর্চার সহ-সভাপতি কালাচাঁদ মণ্ডল ও শ্রমিক সংগঠনের নেতা রবীন্দ্রনাথ রায়। পরিস্থিতি এমনটা হয় যে, অফিসের শাটার বন্ধ করে দিতে হয়। যদিও দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) এটাকে ক্ষোভ বলে মানতে চাননি। তার মতে, এটা জিততে না পারার একটা হতাশা।
সোমবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আসানসোলে যান নির্বাচনের ফলের আলোচনার জন্য জেলা নেতৃত্ব ও মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করতে। আসানসোলের ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ধাদকার পার্টি অফিসে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে দিলীপ ঘোষ ছাড়াও ছিলেন দলের জেলা আহ্বায়ক শিবরাম বর্মন, জেলা সভাপতি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই, রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, সৌরভ শিকদার, জিতেন্দ্র তিওয়ারি, জেলা যুব মোর্চার সভাপতি অরিজিৎ রায়-সহ অন্য সব শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব। এই বৈঠকে জায়গা না পেয়ে বিক্ষোভে শামিল হন বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। সেই সময় বিজেপি জেলা নেতৃত্ব বিক্ষোভরত কর্মীদের দলীয় কার্যালয়ের বাইরে বার করে দেওয়ার পর আরও উত্তেজনা বাড়ে। পরে জেলা আহ্বায়ক শিবরাম বর্মন আশ্বাস দেন বৈঠকের পর রাজ্য সভাপতি তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। তারপরেই বিক্ষোভ থামে।
[আরও পড়ুন: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্ট, গ্রেপ্তার বাগদার BJP কর্মী]
এদিনের বৈঠকে জেলায় ১০ বছরের পুরনো নেতারা সংগঠনকে নতুন করে সাজানোর জন্য বেশকিছু প্রস্তাব দেন। দলের দুই পুরনো নেতা বিবেকানন্দ ভট্টাচার্য ও শংকর চৌধুরী মূলত গত কয়েক দিন ধরে সবার সঙ্গে কথা বলে এইসব প্রস্তাব তৈরি করেন। বৈঠকের পরে দিলীপ ঘোষ বলেন, “এই জেলার সবাই বিধানসভা নির্বাচনে খুব পরিশ্রম করেছেন৷ জেলায় তিনটি কেন্দ্রে দলের প্রার্থীরা জিতেছেন। সবার একটা প্রত্যাশা ছিল যে, দল বাংলায় এবার ক্ষমতায় আসবে। শক্তি বাড়লেও, দল ক্ষমতায় আসতে পারেনি। তার থেকেই দলের নেতা ও কর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। এটাকে ক্ষোভ কোনওভাবেই বলা যায় না। এটা স্বাভাবিক। এটা সব জায়গাতেই হচ্ছে। আমরা তাঁদের মনোবল ফিরিয়ে আনতে পারছি। কেন হার হয়েছে, তার পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সামনে পুরনির্বাচন ও দেড়বছর পরে পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে। আমরা এইসব ভোটে লড়াই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।”