বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য ও ধনরাজ তামাং: পাহাড়ের ভোট টানতে বিজেপি প্রার্থীকে পাশে নিয়ে 'গোর্খাল্যান্ড' ট্রামকার্ড খেলে দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বুধবার দার্জিলিং জেলাশাসকের দপ্তরে মনোনয়নপত্র জমা করেন বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। সেখানেই ছিল মোর্চার শক্তি প্রদর্শনের আয়োজন বিরাট জনসভা। ওই সভায় মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং জানান, গোর্খাল্যান্ডের দাবি আদায়ের জন্য আরও একবার বিজেপির পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটাই হবে গেরুয়া শিবিরের শেষ সুযোগ।
বিজেপি প্রার্থী পরিবর্তনের পরম্পরা এবার পাহাড়ে ধরে রাখতে পারেনি গুরুংয়ের চাপে। অনেক টানাপোড়েন কাটিয়ে রাজু বিস্তাকেই প্রার্থী ঘোষণা করে দল। এর পরই সেখানে রাজনীতিতে একের পর এক মোড় শুরু হয়ে যায়। এদিন মনোনয়নপত্র জমা দেন বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। সেটা সামনে রেখে একইসঙ্গে শক্তি পরীক্ষার বড় চমক দিতে ভোলেনি গুরুংয়ের দল। বিরাট জনসভার আয়োজন ছিল। সেখানে মুহূর্মুহু উঠেছে 'গোর্খাল্যান্ড জিন্দাবাদ' স্লোগান। বিজেপি প্রার্থী নিজেও গলা মেলান। তিনি বলেন, "বিজেপি প্রতিশ্রুতি পালনে অটল। পাহাড়ের সমস্যা বিজেপি পূরণ করবেই।" পাহাড়ে গুরুংদের পাশে পেয়ে বিজেপির কতটা লাভ হতে চলেছে সেটা অবশ্য ভবিষ্যৎ বলবে। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, কোণঠাসা গুরুং 'কিং মেকার'-এর ক্যারিশমা ফিরিয়ে আনতে প্রাণপণ চেষ্টা করবেন বিজেপির জন্য পাহাড়ে বিরাট ব্যবধানে লিডের ব্যবস্থা করার। সেই ম্যাজিক কার্যকরী করতেই গুরুং ফের গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে শান দিয়েছেন। কিন্তু সেটা কতটা কার্যকর হবে বোঝা যাবে ভোটের ফল ঘোষণার পর।
[আরও পড়ুন: কথায় কথায় ‘রগড়ে দেন’, ছেলেবেলায় তিনিই নাকি লাজুক ছিলেন, কেন বিয়ে করেননি দিলীপ ঘোষ?]
লোকসভা ভোটে পাহাড়ের রাজনীতির সমীকরণে গুরুংয়ের ভূমিকা কী সেই প্রশ্নে বেশ চর্চা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। তিনি ২০১৯ থেকেই রাজু বিস্তার শুভাকাঙ্খি। যে কারণে রাজু জানাতে ভোলেননি দার্জিলিং পাহাড়ে তাঁর রাজনৈতিক গুরু বিমল গুরুং। কিন্তু এবার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা প্রার্থী হচ্ছেন শুনে গুরুং বেঁকে বসেন। বিজেপির উপরে চাপ বাড়াতে তৃতীয় ফ্রন্টের দরজা খুলে দলের নেতা রোশন গিরিকে দিল্লিতে বসিয়ে রাখেন আলোচনার জন্য। শেষ পর্যন্ত শ্রীংলাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যান রাজু। এবার দেখার সেই গোর্খাল্যান্ডের তাস খেলে বিমল গুরুং কতটা ডিভিডেন্ড এনে দিতে পারেন বিজেপিকে।