ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আগামী ১০ জুলাই রাজ্যের ৪ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তার আগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল। শুক্রবার সকালে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল X হ্যান্ডলে প্রার্থীর নাম জানানো হয়েছে। মানিকতলায় টিকিট পেলেন সুপ্তি পাণ্ডে। বাগদায় প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর, রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যাণী, রানাঘাট দক্ষিণে মুকুটমণি অধিকারী।
বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস দলবদল করে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করেন। সে কারণে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। তাই বিধায়কশূন্য বাগদাতেও আগামী ১০ জুলাই ভোটাভুটি। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর। তিনি সম্পর্কে মমতাবালা ঠাকুরের মেয়ে। সম্প্রতি ঠাকুরবাড়ির বড়মা বীণাপাণি দেবীর ঘর দখলের অভিযোগ ওঠে শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে। সেই সময় মায়ের সঙ্গে অনশনেও বসেছিলেন মধুপর্ণা। বাংলায় বিপুল সবুজ ঝড়ের মাঝেও লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ কেন্দ্রে তেমন ভালো ফল হয়নি তৃণমূলের। এই পরিস্থিতিতে মতুয়াগড় হিসাবে পরিচিত বাগদায় ঠাকুরবাড়ির মেয়েকে প্রার্থী করা কৌশলী চাল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে প্রার্থীতালিকায় নিঃসন্দেহে বাগদার প্রার্থী মধুপর্ণাই যে বড় চমক, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
কারণ, বাকি তিন কেন্দ্রের বিধানসভা উপনির্বাচনে(West Bengal Bye Election) প্রার্থী কারা হতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছিলই। যেমন মানিকতলার ক্ষেত্রে সুপ্তি পাণ্ডেই যে টিকিট পাচ্ছেন, তা মোটের উপর নিশ্চিতই ছিল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যু হয় সাধন পাণ্ডের। তিনি ছিলেন মানিকতলার বিধায়ক। তার পর থেকেই মানিকতলা বিধায়কহীন। তা নিয়ে মামলার জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও। তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পর সেই জল্পনাতেই সিলমোহর। সাধন জায়া সুপ্তিকেই সেখানে প্রার্থী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘মুসলিমকে এরা বরাবরই ঘেন্না করে!’ মোদির মন্ত্রিসভা দেখে বিরক্ত নাসিরউদ্দিন শাহ]
তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, রায়গঞ্জে ফের টিকিট দেওয়া হয়েছে কৃষ্ণ কল্যাণীকে। গত বিধানসভা নির্বাচনে ওই কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে লড়েন তিনি। এর পর অবশ্য দলত্যাগ করেন। তৃণমূলে যোগ দেন কৃষ্ণ কল্যাণী। লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থীও করে তৃণমূল। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন কৃষ্ণ। যদিও লোকসভা নির্বাচনে তেমন কিছু করতে পারেননি কৃষ্ণ। পরিবর্তে বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান। এবার ফের কৃষ্ণতেই আস্থা শাসক শিবিরের।
রানাঘাট দক্ষিণেও একইভাবে 'দলবদলু' মুকুটমণি অধিকারীর উপরেই আস্থা রেখেছে শাসক শিবির। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিট রানাঘাট দক্ষিণে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মুকুটমণি। সেখানে তাঁর হাত ধরে ফোটে পদ্ম। তবে সম্প্রতি দলবদল করেন। মুকুটমণি তৃণমূলে নাম লেখান। লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থীও করা হয়। তবে বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান মুকুটমণি। হেরে যাওয়ার পরেও তাঁর উপরেই আস্থা রাখল ঘাসফুল শিবির। বিধানসভা উপনির্বাচনেও মুকুটমণিকেই টিকিট দিল তৃণমূল।