অর্ণব আইচ: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তের গতিতে সিবিআইয়ের উপর ক্ষুব্ধ আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক। সিবিআইয়ের ভূমিকায় বিরক্ত হলেও বৃহস্পতিবার জামিন পেলেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ সাতজন। ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে প্রত্যেকে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি ফের আদালতে পেশ করা হবে তাঁদের।
জেল হেফাজত শেষে বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ সাতজনকে আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়। অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিনহার আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত বলেন, “হাই কোর্ট তদন্ত শুরু করতে বলেছিল। কিন্তু ফেট তদন্ত অথবা ফারদার ইনভেস্টিগেশন সম্পর্কে হাই কোর্ট কিছু জানায়নি। তাহলে কেন অভিযুক্তদের আটকে রাখা হচ্ছে?”
এরপর বিচারক সিবিআইয়ের আইনজীবীকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন।
বলেন, “আপনারা চার্জশিটে লিখেছিলেন বাকি অভিযুক্ত এবং প্রার্থীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা দরকার। সেটা কই? তারা কোথায? আমি ৭ ডিসেম্বর কাজে যোগ দিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি। অনেকদিন হয়েছে। আমি জানি এটা একটা বড় কাজ। প্রায় ৩৫০ জন আছে।” পালটা জবাব দেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তাঁর দাবি, তদন্তের স্বার্থে অনেক তথ্য আদালতে সকলের সামনে বলা সম্ভব নয়। বিচারক আবার বলেন, “১৬৪ জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেছেন? কোনও ব্যাংকের স্টেটমেন্ট নিয়েছেন? যেটা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। অন্তত একটা ১৬৪ করান।”
[আরও পড়ুন: বাঘে-বিড়ালে এক কুয়োতে হাবুডুবু! প্রাণে বাঁচার মরিয়া চেষ্টা, ভিডিও দেখে চমকালো নেটদুনিয়া]
হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বিস্তারিতভাবে তদন্ত করা হচ্ছে বলেই দাবি সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকের। তিনি বলেন, “আমরা বিস্তারিত তদন্ত করছি। বেসিক কাজ না করলে পারপাস ফুলফিল সলভ হবে? তাই একটু সময় চাই। ব্যাংকের কিছু তথ্য দরকার।” বিচারক বলেন, “অভিযুক্তদের কিছু অধিকার রয়েছে। অনির্দিষ্টকাল তো তদন্ত চলছে বলা যায় না। আর কতদিন সময় লাগবে?” অভিযুক্তদের উদ্দেশ্য করে সিবিআইয়ের আইনজীবী পালটা উত্তর দেন।
বলেন, “এরা তো বলবেই আমরা তদন্ত করছি না। তদন্তের নামে আমরা কারও জামিন আটকাতে পারি না। কিন্তু তদন্ত একটা জায়গায় শুরু হয়েছিল, তখন অভিযোগ ছিল বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তী তদন্তে কী দেখা যাচ্ছে? কীভাবে ম্যানুপুলেট করা হল? কীভাবে নিয়োগ করা হল? কীভাবে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হল, পুরোটাই আমরা খুঁজে বের করছি। নিয়োগের আগেই পুরো পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমাদের কেস ডাযেরি সেকথা বলছে। প্রত্যেকেই ষড়যন্ত্রের অংশীদার। সকলকে হেফাজতে নেওয়া দরকার।” এরপরই জামিনের আবেদন খারিজ করে ধৃত সাতজনের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আগামী ২ মার্চ ফের আদালতে পেশ করা হবে তাঁদের। আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে প্রায় নির্বিকার পার্থ। ডিএ বৃদ্ধি এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের স্বীকারোক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। ক্ষণিকের জন্য দাঁড়ান তিনি। বলেন, “আপনারা সবাই ভাল থাকুন।”