অর্ণব আইচ: এ যেন বান্টি-বাবলি! প্রায় ন’বছর ধরে অফিসের পৌনে সাত কোটি টাকা হাতিয়ে একাধিক গাড়ি, ফ্ল্যাট, বিপুল নগদ, সোনার গয়নার মালিক স্বামী-স্ত্রী। শেষ পর্যন্ত মধ্য কলকাতার বউবাজার থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হল দম্পতি।
পুলিশ জানিয়েছে, বউবাজার এলাকার একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করত অমিত সেন। মূলত সংস্থার অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ করত সে। সংস্থার কর্ণধাররাও তাকে বিশ্বাস করতেন। সেই সুযোগ নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কিছু টাকা অল্প অল্প করে সরাতে শুরু করে। নিজের ও স্ত্রী মামনি সেনের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে থাকে। পুলিশের অভিযোগ, এই টাকা হাতানোয় স্বামীকে সহযোগিতা করছিল স্ত্রীও। এই বছরেই কিছুদিনের জন্য অমিতের বদলে অন্য এক কর্মচারী হিসাবরক্ষকের কাজকর্ম দেখাশোনা করছিলেন। হিসাবের খাতাপত্র দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখেন, কোটি কোটি টাকা তছরূপ করা হয়েছে। এর পরই সংস্থার পক্ষ থেকে বউবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে যে, ১২০টি চেকে জাল সই করে টাকা হাতাতে শুরু করে অমিত। এভাবে মোট ৬ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা হাতানোর প্রমাণ মেলে। অমিত ও তার স্ত্রী মামণির নামে তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পায় পুলিশ। সেই তিনটির মধ্যে দু’টি অ্যাকউন্টে এক কোটি টাকা করে মোট দু’কোটি টাকা নগদ রাখা ছিল।
[আরও পড়ুন: লোকসভার আগে ফের শক্তিবৃদ্ধি, অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে আরও ১ বিজেপি বিধায়ক]
এ ছাড়াও ছিল ৭০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না। আরও বেশ কিছু গয়না পুলিশ উদ্ধার করে অমিতের বাড়ি থেকে। ওই পুরো গয়নাই জালিয়াতির টাকা থেকে কেনা বলে অভিযোগ পুলিশের। এ ছাড়াও হাতিয়ে নেওয়া টাকা দিয়ে চারটি বিলাসবহুল গাড়ি ও পাঁচটি ফ্ল্যাট ওই দম্পতি কেনে বলে অভিযোগ পুলিশের। ওই টাকা, গয়না ও সম্পত্তি পুলিশ আটক করেছে। বিপুল টাকা হাতানোর অভিযোগে পুলিশ প্রথমে অমিত সেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই জালিয়াতিতে স্ত্রী মামণি যুক্ত বলে পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারেন। বৃহস্পতিবার মামণিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কীভাবে দম্পতি টাকা হাতিয়ে নিত, তা জানতে তাদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।