বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ভূমিধসে বিধ্বস্ত সিকিম দেখে আতঙ্কিত পর্যটকরা পড়িমরি সমতলে ফেরার চেষ্টায় মরিয়া। বুকিং বাতিলের সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু পাহাড় থেকে নামবেন কোন পথে? সেই চিন্তায় দিশাহারা তাঁরা। একদিকে উত্তর সিকিমে সঙ্কলন বেইলি ব্রিজ ভেসে যাওয়ায় জংগু, চুংথাং, লাচেন এবং লাচুং বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সেখানে আটকে পড়েছেন অন্তত দেড় হাজার পর্যটক। যাঁরা গ্যাংটকে আছেন, তাঁরাও বিপাকে। কারণ, সিকিমে ভারী বর্ষণ এবং তিস্তা নদী ফুঁসে ওঠায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে গ্যাংটক-শিলিগুড়ি যাতায়াতের 'লাইফ লাইন' ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। বৃহস্পতিবার কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালা সুব্রহ্মণ্যন টি ওই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, মেল্লি সেতু, রবিঝোরা, লিখুভিড়ে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিকিম (Sikkim) প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতের মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান ও ভূমিধসে একাধিক এলাকা বিধ্বস্ত হয়েছে। মৃত্যু (Death) হয়েছে অন্তত ৬ জনের। লাচেন, চুংথাং, মঙ্গনের বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ। এখানে আটকে পড়েছেন প্রচুর পর্যটক। প্রশাসনের তরফে তাদের স্থানীয় হোটেলে থেকে রাস্তা খুললে গ্যাংটকে (Gangtok) পৌঁছনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিপদ হয়েছে সঙ্কলন সেতু ভেসে যাওয়ায়। ২০২৩ সালে লোনার্ক হ্রদ বিপর্যয়ে হড়পা বানে ওই সেতু উড়ে যায়। এর পর সেনাবাহিনী ও সিকিম প্রশাসনের চেষ্টায় সেখানে বেইলি ব্রিজের ব্যবস্থা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবনির্মিত সেতুটি ভেসে যায়। মঙ্গন জেলা পুলিশের তরফে অবশ্য আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। ওই সেতুটি মঙ্গন, জংগু এবং চুংথাংয়ের মধ্যে একমাত্র যোগাযোগের পথ।
ছবি: পিটিআই
[আরও পড়ুন: স্টিমাচ পরবর্তী জমানার হেডস্যর কে? তিন দেশীয় কোচকে এগিয়ে রাখছেন বিজয়ন]
টুং সেতুটি (Bridge) চলাচল অযোগ্য হয়েছে আগেই। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে জংগু, চুংথাং, লাচেন এবং লাচুং সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অথচ এখানেই বেশি ভিড় পর্যটকদের। তাদের বের করে আনতে ফিডাং-এ একটি বিকল্প সেতু নির্মাণের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, দুসপ্তাহ আগে থেকে আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করার পরও কেন পর্যটকরা উত্তর সিকিমে তুষারপাত (Snowfall) দেখতে উতলা হয়ে বিপদ ডাকছেন?
[আরও পড়ুন: অভিষেকের নম্বর ‘ক্লোন’ করে ফোনে জমি নিয়ে কথা! দিল্লি থেকে ধৃত রূপান্তরকামী-সহ ২]
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পর্যটকদের উদ্ধার করে গ্যাংটকে পৌঁছে দিতে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মীরা প্রস্তুতি নিয়েও বৃষ্টির জন্য নামতে পারেনি। অবশেষে পরিস্থিতি বুঝে শুক্রবার অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সেটাও কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ, আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে উত্তর সিকিমে ভারী বর্ষণ চলবে। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে সেখানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলছেই ।