সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজধানী সংকট কাটতে চলেছে অন্ধ্রপ্রদেশের! মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার আগেই বড় ঘোষণা চন্দ্রবাবু নায়ডুর। মঙ্গলবার তিনি ঘোষণা করেন, ''আমাদের রাজ্যের রাজধানী হতে চলেছে অমরাবতী।'' তাঁর বার্তা প্রকাশ্যে আসার পর রাজনৈতিক মহলের দাবি, ৪ মন্ত্রকের গোঁ ধরে বসে থাকা নায়ডুর মন জয় করতে এই অমরাবতীকেই হাতিয়ার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এনডিএ মন্ত্রিসভায় ৪ মন্ত্রকের দাবি জানানো হলেও শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় মাত্র দুটি মন্ত্রক দেওয়া হয়েছে চন্দ্রবাবুর দল টিডিপিকে। রফা চূড়ান্ত হওয়ায় পিছনে এই অমরাবতী রয়েছে বলেই অনুমান রাজনৈতিক মহলের। অমরাবতীকে রাজধানী বানানোর স্বপ্ন চন্দ্রবাবু নায়ডুর দীর্ঘদিনের। তাই মন্ত্রকে ঘাটতি এলেও অমরাবতী-আশ্বাসেই মোদির সামনে নরম হয়ে যান নায়ডু।
[আরও পড়ুন: শেয়ার বাজারে বড়সড় দুর্নীতি! মোদি-শাহের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে সেবির দ্বারস্থ তৃণমূল]
জানা যাচ্ছে, এনডিএ বৈঠকে মোদি সরকারের তরফে বার্তা দেওয়া হয় টিডিপিকে দুটি মন্ত্রক দেওয়া হবে। একইসঙ্গে অমরাবতীকে রাজধানী বানাতে সমস্ত রকম আর্থিক সহায়তা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তার পর মন্ত্রক নিয়ে আর দর কষাকষিতে না গিয়ে প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান টিডিপি প্রধান। এমনকী ৪ মন্ত্রক তো দূর, শোনা যাচ্ছে রাজধানী গঠনে মোদি সরকার পূর্ণ আর্থিক সহায়তা দিলে লোকসভার স্পিকার পদে যে দাবি টিডিপির তরফে তোলা হয়েছে সেখান থেকেও পিছু হঠতে রাজি চন্দ্রবাবু। মঙ্গলবার অমরাবতীকে রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি চন্দ্রবাবু জানিয়েছেন, বিশাখাপত্তনমকে অর্থনৈতিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, একটা সময় অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী ছিল হায়দরাবাদ। তবে ২০১৪ সালে তেলেঙ্গানা রাজ্য তৈরি হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত হায়দরাবাদই দুই রাজ্যেরই রাজধানী। ২০১৫ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর অমরাবতীকে রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। শুধু তাই নয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন। এদিকে রাজধানীর মাস্টার প্ল্যান ঘোষিত হওয়ার কথা আগাম জানতে পেরে বহু প্রভাবশালী সেখানে জমি কেনেন। তবে ২০১৯ সালে জগনমোহন রেড্ডি ক্ষমতায় আসতেই এই প্রকল্প বাতিল করে দেন। এবং সেই জমি কেলেঙ্কারির তদন্তের নির্দেশ দেন। তাঁর আমলে অমরাবতীকে রাজধানী গঠনের প্রক্রিয়াও কার্যত বন্ধ হয়। এহেন পরিস্থিতিতে এবার ক্ষমতায় ফিরে মোদি সরকারের সাহায্য নিয়ে রাজধানী গঠনের কাজ শুরু করার বার্তা দিলেন চন্দ্রবাবু।
[আরও পড়ুন: জিসকা স্পিকার, উসকি সরকার! টিডিপি-বিজেপির টানাপোড়েনে জিতবে কে?]
এদিকে মঙ্গলবারই সর্বসম্মতিক্রমে এনডিএ-র পরিষদীয় দলনেতা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন চন্দ্রবাবু। দলনেতা হিসাবে তাঁর নাম প্রস্তাব করেন এনডিএ-র আর এক শরিকদল জনসেনার নেতা, অভিনেতা-রাজনীতিক পবন কল্যাণ। তাঁর এই প্রস্তাব সমর্থন করেন অন্ধ্রের বিজেপি সভাপতি ডি পুরন্দেশ্বরী।