সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ (Bangladesh)। আন্দোলনে সামিল হয়েছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলিগের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। আহত অসংখ্য। এই অবস্থায় সব পক্ষকে শান্তির বার্তা দিলেন দুই বাংলায় জনপ্রিয় এবং মান্য সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন (Kabir Suman)। ফেসবুকে তিনি লেখেন, "অনুগ্রহ করে হিংসা হানাহানি বন্ধ করুন।" তবে "বিরোধী হলেই রাজাকার!" এই মন্তব্যেরও বিরোধিতা করেছেন কিংবদন্তি শিল্পী।
দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে সুমন লিখেছেন, "আমি ভারতের নাগরিক। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী। তার বিষয় আসয়ে নাক গলানোর অধিকার আমার নেই। সেটা করতে চাইও না। তবু বাংলাদেশের অনেকের কাছ থেকে যে ভালবাসা আমি পেয়েছি তা ভুলে থাকতেও পারছি না।" আরও লেখেন, "বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় চুপ করে বসে থাকতে পারি না। থেকেছি কয়েক দিন। আর পারছি না। কিন্তু অবস্থাটা যে ঠিক কী, কী কী কারণে যে এমন হল এবং হচ্ছে, কারা যে এতে জড়িত তাও তো ঠিকমতো জানি না। তাও পঁচাত্তর উত্তীর্ণ এই বাংলাভাষী করজোড়ে সব পক্ষকে মিনতি করছি: অনুগ্রহ করে হিংসা হানাহানি বন্ধ করুন। ঢাকা সরকারকে অনুরোধ করছি: বাংলা ভাষার কসম শান্তি রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। আপনাদের ছাত্রবাহিনী যেন হিংসার আশ্রয় না নেন।" ফেসবুক পোস্টের শেষ অংশে তিনি লেখেন--- "হানাহানি বন্ধ হোক। বন্ধ হোক উল্টোপালটা কথা বলে দেওয়া। বাঁচুক বাংলাদেশ। বাঁচুন বাংলাদেশের সকলে। জয় বাংলাদেশ। জয় মুক্তিযুদ্ধ। জয় অসংখ্য বাংলাদেশীর শাহাদাত ও অপূরণীয় ক্ষতিস্বীকার। জয় বীরাঙ্গনারা। জয় বাংলা ভাষা!"
[আরও পড়ুন: মোদির সঙ্গে বৈঠক শাহের, রাজ্যপালের দ্বারস্থ যোগী, উত্তরপ্রদেশে কি বড়সড় বদল?]
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি পদ্যও পোস্ট করেছেন বাংলা গানের মোড় ঘোরানো গীতিকার, সুরকার, গায়ক। যার শুরুতেই প্রশ্ন তোলেন--"বিরোধী হলেই রাজাকার!/ বলে দাও তবে দেশটা কার/ দেশটা কার দেশটা কার!" অন্তিম স্তবকে লেখেন--- "বাংলা ভাষা যে তোমাকে আমাকে/ সকলকে দেয় এক ক'রে/ বাংলাদেশের সবাই বাঁচুক/ নি:শ্বাস নিক প্রাণ ভ'রে।"(কবীর সুমনের সম্পূর্ণ পোস্ট এই প্রতিবেদনের সঙ্গে এমবেড করা হয়েছে)।
[আরও পড়ুন: ‘আমাদের রাজ্যে আসুন’, কর্নাটকে কোটা বিতর্কের মধ্যে লগ্নি টানতে আসরে অন্ধ্র-কেরল]
উল্লেখ্য, আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানসন্ততিদের সংরক্ষণ তুলে দিত হবে। কোটা হবে কেবলমাত্র আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের জন্যে। গত ১ জুলাই থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ পদ্মাপাড়ের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। মঙ্গলবার থেকে তা হিংসাত্বক আকার ধারণ করেছে। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬ জন। আহত অংসখ্য যুবক-যুবতী। তাঁদের মধ্যে কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক।