shono
Advertisement

‘৩৫৬ ধারা জারির দরকার নেই, সরকারই বদল হবে’, বঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন নিয়ে জবাব অমিত শাহর

সাংবাদিক বৈঠকে পাহাড় ও CAA প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট উত্তর মিলল না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।
Posted: 08:01 PM Nov 06, 2020Updated: 08:19 PM Nov 06, 2020

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন কয়েক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির রিপোর্ট দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বাংলায় এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া দরকার বলে জানিয়ে এসেছিলেন। এরপরই অমিত শাহের (Amit Shah) দু’দিনের বাংলা সফরে অবধারিতভাবে উঠল বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রশ্ন। নিউটাউনের (New Town) পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি স্মিত হেসে বললেন, ”৩৫৬ ধারা জারির আর দরকার হবে না, ততদিনে সরকারই বদলে যাবে।”

Advertisement

প্রায় আধঘণ্টার সাংবাদিক বৈঠকে আরও অনেক কিছু নিয়েই বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শুরুতে যথারীতি রাজ্যের তৃণমূল সরকারের নেতিবাচক দিকগুলো বেশি করে তুলে ধরে সমালোচনায় মুখর হলেন। বললেন, ”এ রাজ্যে এখন তিনটি আইনের শাসন চলছে। ভাইপোর জন্য আইন, ভোটব্যাংকের জন্য আইন এবং তারপর সাধারণ মানুষের জন্য আইন।” তাঁর মতে, এ রাজ্যে প্রশাসনকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে, রাজনীতিতে অপরাধের মাত্রা বাড়ছে। এ প্রসঙ্গেই তিনি উল্লেখ করেন রাজ্যে রাজনৈতিক হত্যার কথা। বিশেষত বিজেপি কর্মীদের হত্যার যথাযথ বিচার হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। পরিসংখ্যান তুলে ধরে অমিত শাহর দাবি, NCRBর তালিকায় অপরাধের শীর্ষে বাংলার নাম, মহিলাদের প্রতি অপরাধ বাড়ছে। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে কেন মহিলারা এত নিরাপত্তাহীন? এই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

[আরও পড়ুন: ‘আমার একটাই পার্টি’, অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রতিক্রিয়া পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর]

বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাসঙ্গিকতা কমছে, এই দাবি তুলে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী সুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মানুষের আশীর্বাদ সঙ্গে আছে, আগামী বিধানসভায় বাংলায় বিজেপিই সরকার গড়বে। তখন এখানে আয়ুষ্মান ভারত, কিষাণনিধি যোজনার মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত মানুষজনকে সমস্ত সুবিধা দেওয়া হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব প্রকল্প চালু করছেন না? যদিও লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়ে পুজোর আগেই এই দুই কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্যে চালু করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে চিঠি লিখেছিলেন। বিমল গুরুং থেকে পাহাড় রাজনীতি, CAA ইস্যু নিয়ে অমিত শাহকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। কোনও প্রশ্নেরই খুব সুনির্দিষ্ট জবাব দেননি তিনি। একুশে বাংলা দখলের লক্ষ্য স্থির করা সত্ত্বেও কেন মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নেই? এই প্রশ্নের উত্তর তিনি জানান যে এমন অনেকবারই হয়েছে যে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছাড়াই ভোটে লড়েছেন। জেতার পর ঠিক হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নাম। বাংলাতেও সেই স্ট্র্যাটেজিই নিচ্ছেন।

[আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে ভাববেন না, নিজেদের কাজ করুন’, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে নির্দেশ অমিত শাহর]

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ‘বিজেপি’ ঘনিষ্ঠ বলে বারবার অভিযোগ করেছে তৃণমূল। তিনি কি সত্যিই নিজের সাংবিধানিক অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করছেন বাংলায়? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে অবশ্য ধনকড়ের পাশেই দাঁড়িয়েছেন অমিত শাহ। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যপাল যা করছেন, সংবিধান মেনেই কাজ করছেন। এরপর তাঁর পালটা প্রশ্ন, ”দার্জিলিংয়ে উনি গেলেন, ডিএম ওনার সঙ্গে দেখা করলেন। আর তার পরেরদিনই ওই ডিএমকে বদলি করে দেওয়া হল। এর কারণ কী, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেই জানতে চাইছি।” একদিকে, দলীয় সংগঠন আরও জোরদার করার বার্তা, অপরদিকে, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ – একুশের ভোটের আগে বঙ্গে জোড়া বাদ্যি বাজিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement