অভিরূপ দাস: ফের শহরে রেফার রোগ! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মুমূর্ষু রোগীকে ফেরাল শহরের ৫ হাসপাতাল। টানা ১৮ ঘণ্টা মরণাপন্ন রোগীকে নিয়ে চিকিৎসকদের দোরে দোরে ছুটল পরিবার। শেষে অবশ্য কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দার। সোমবার সকালে এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল এ শহর তিলোত্তমা।
রবিবার ফুটপাথে ফলের রস বিক্রি করার সময় মাথা ঘুরে পড়ে যান পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা রামনারায়ণ শাহ। বয়স ৬০ বছর। তাঁর ব্রেন স্ট্রোক হয়। এর পরই পরিবারের সদস্যরা তাঁকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে জরুরী বিভাগে ছোটেন। সেখানে তাঁদের বলা হয়, রামবাবুর ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে কোনও বেড নেই। তাই তাঁকে এরপর শিয়ালদহের এনআরএস হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেও বেড ছিল না বলে অভিযোগ। তাই তাঁকে রেফার করা হয় পার্ক সার্কাস চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
[আরও পড়ুন: পশু-পাখিদের জন্য আলিপুর চিড়িয়াখানার ভিতরই হবে মিনি হাসপাতাল, ঘোষণা বনমন্ত্রীর]
এই হাসপাতালে আবার ব্রেনের চিকিৎসার উপযু্ক্ত পরিকাঠামো নেই বলে জানান চিকিৎসকেরা। ফলে ফের রেফার করা হয় ওই রোগীকে। এরপর পরিবারের সদস্যরা মল্লিক বাজার ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসায় খরচ প্রচুর। তাই সেখান থেকে রোগীকে নিয়ে বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে আসেন তাঁরা। অভিযোগ, সেখান থেকে একপ্ৰকার গলাধাক্কা দিয়ে পুলিশ বার করে দেয় তাঁদের। এরপর আবার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় রামনারায়নবাবুকে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, জরুরী বিভাগে রোগীকে ফেলে রাখা হয়। সেই সময় তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। সোমবার সকাল পর্যন্ত তাঁর কোনও চিকিৎসা হয়নি। বেলা ১২টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনাপ্রসঙ্গে এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার পীযূষ রায় জানিয়েছেন, “এমনটা হওয়া উচিৎ হয়নি। তবে একটাও বেড খালি না থাকলে রোগী ভরতি নেওয়া তো সম্ভব নয়।” এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা খোঁজ নিচ্ছে গোটা বিষয়টির।