এনগেজমেন্ট-এর পরে এই প্রথম মুখ খুললেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। জীবনের চড়াই-উতরাই, প্রাক্তন আর নতুন স্বামী- কোনও কিছু নিয়েই আর রাখ-ঢাকে নেই তিনি।
এনগেজমেন্টের দিনে শ্রাবন্তী আর কৃষাণ
সংবাদ প্রতিদিন: এনগেজমেন্ট-এর পরে আপনার প্রথম ছবি রিলিজ করতে চলেছে আজ৷
শ্রাবন্তী: আমি খুবই এক্সাইটেড৷ ‘শেষ সংবাদ’ ছবিটা বেশ কিছুদিন আগে শুটিং করেছিলাম৷ আর সত্যি সত্যি এনগেজমেন্ট-এর পর রিলিজ করছে বলে আরও খুশি৷ আর কিছুদিন পরেই অবশ্য আরও একটা ছবি আসবে আমার৷ সেটা যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘শিকারি’৷ সেখানে আমার নায়ক বাংলাদেশের টপ হিরো সাকিব খান৷
সংবাদ প্রতিদিন: তা হলে বলা যায় এখন জীবন উপভোগ করছেন?
শ্রাবন্তী: আমি সবসময় জীবন উপভোগ করেছি৷ আজকেও লাইফ এনজয় করছি৷ আমি খুব পজিটিভ৷ সবসময় জীবন থেকে ভালটা নেওয়ার চেষ্টা করেছি৷ তাতে যাই হয়ে যাক না কেন৷
সংবাদ প্রতিদিন: কখন ঠিক করলেন যে এবারে গাঁটছড়া বেঁধে নেওয়া ভাল?
শ্রাবন্তী: এর আগে আমি সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি৷ জীবনের অনেক আপস-অ্যান্ড ডাউন্স দেখেছি৷ কিন্তু মনের জোর হারাইনি কখনও৷ কৃষাণ-এর ক্ষেত্রে তিন-চার মাস আগে ঠিক করে ফেলেছিলাম যে এনগেজমেন্টটা এই জুলাইতেই করব৷ যখন মনের মানুষ পেয়েই গিয়েছি, দেরি করে কী লাভ! ফিল করেছি সারাজীবন ওর সঙ্গেই থাকতে পারব৷ তখনই ডিসাইড করেছি৷ মা-বাবা, দিদি, জামাইবাবু সবার মত নিয়েছি৷ আর অবশ্যই ঝিনুকের মতামত আমার কাছে অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ৷ ঝিনুক কৃষাণকে খুব পছন্দ করে৷ ফলে এই সম্পর্কটা নিয়ে আমি এগোব, তখনই ঠিক করি৷
সংবাদ প্রতিদিন: ঝিনুকের সঙ্গে কৃষাণ-এর সম্পর্কটা ঠিক কীরকম?
শ্রাবন্তী: একদম বন্ধুর মতো৷ ওরা পরস্পরের পিছনে লাগে৷ আর আমরা তিনজন একসঙ্গে থাকলে মনে হয় পৃথিবীর আর কাউকেই দরকার নেই৷ একদম পরিপূর্ণ ফ্যামিলি৷
ছেলে ঝিনুক আর কৃষাণের সঙ্গে শ্রাবন্তী
সংবাদ প্রতিদিন: আপনি যখন আমেরিকায় গিয়ে ছিলেন সেই সময়ই পুরো আয়োজনটা আপনার বাড়ির লোক করেছিলেন…
শ্রাবন্তী: হ্যাঁ, আমার দিদি, জামাইবাবু সুজয়, আর মা-বাবা সবাই মিলে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল৷ আপাতত রেজিস্ট্রি করলাম৷ সামনের বছর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর-এর মধ্যেই আনুষ্ঠানিক বিয়ে আমাদের৷
সংবাদ প্রতিদিন: কৃষাণ-এর সঙ্গে প্রথম দেখা কোথায়?
শ্রাবন্তী: মুম্বইয়ে প্রথম দেখা৷ সেটা ২০১৫-র মার্চ অথবা মে মাস হবে৷ সেই সময় সামান্য কিছু কথাবার্তা হয়েছিল৷ তখন কিন্তু প্রেমে পড়িনি৷ মুম্বই-এ একটা ফ্যাশন উইক চলছিল, আমি আমার কাজিনের সঙ্গে গিয়েছিলাম৷ ওখানেই আলাপ৷ তারপর থেকে মাঝে মাঝে ফোনে কথা হত৷ এই করতে করতে একদিন দেখা গেল কৃষান-এর সঙ্গে এমনি এমনি কথা বলতে ভাল লাগছে৷ (হাসি)
সংবাদ প্রতিদিন: কৃষাণ কি কলকাতা মুম্বই মিলিয়ে থাকবে?
শ্রাবন্তী: হ্যাঁ, কারণ ওর মডেলিং-এর কাজ, এছাড়া যেমন যেমন কাজ পড়বে ওকে যাতায়াত করতেই হয়৷
সংবাদ প্রতিদিন: কৃষাণ-এর কি অভিনয়ের ইচ্ছা আছে?
শ্রাবন্তী: হ্যাঁ, মিথ্যা বলব না, ও সেরকম ভাবছে ঠিকই৷ দেখা যাক৷ (এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী কৃষাণ মিলন লুথরিয়ার ছবিতে কাজ করতে চলেছেন)৷
সংবাদ প্রতিদিন: আপনার কেরিয়ার নিয়ে ও কি কোনও ইনপুটস দেয়?
শ্রাবন্তী: না৷ আগে তো বাংলা ছবি দেখতই না৷ এখন আমার জন্য বাংলা ছবি দেখে৷ কিছু কিছু ছবি ওর ভালই লেগেছে৷
সংবাদ প্রতিদিন: আজকে পুরনো জীবনে ফিরে তাকালে কী মনে হয়?
শ্রাবন্তী: জীবন নিয়ে প্রেডিক্ট করা যায় না৷ আমি কি কোনওদিন ভেবেছিলাম কৃষাণ ব্রজ যাদব নামে এমন এক সুপার মডেল-এর সঙ্গে আমার দেখা হবে আর আমার মনের মানুষকে খুঁজে পাব? কোনওদিন ভাবিনি অত ডিপ্রেশন, অত খারাপলাগা কাটিয়ে উঠতে পারব৷ কিন্তু সময় তো চলে যায়৷ এবং সেটাই আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে শেখায়৷ সকলের জীবনে এই চড়াই-উতরাই আছে৷ আমিও তার ব্যতিক্রম নই৷ আমি নিজেকে সেলিব্রিটিও মনে করি না৷ কাজেই আর পাঁচটা মানুষের মতো সুখে দুঃখে আলোড়িত হই৷ ইজি লাইফ সবসময় হয় না৷ সবাই চিরকাল দুঃখী থাকে না, আবার সবসময় সুখীও হয় না৷ জীবনের খারাপ-ভালটা নিয়েছি৷ কখনও কারও ক্ষতি করিনি৷ কাজেই জানতাম, আমার খারাপ সময় ঠিক একদিন কেটে যাবে৷
সংবাদ প্রতিদিন: এবার একটা ব্যক্তিগত কথা জিগ্যেস করি৷ এনগেজমেন্ট-এর পর রাজীবের কাছ থেকে কোনও শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছেন? আর যোগাযোগ হয়েছে?
শ্রাবন্তী: না৷ রাজীবের কাছ থেকে কোনও মেসেজ পাইনি৷
সংবাদ প্রতিদিন: রাজীবের সঙ্গে যদি আবার কাজ করতে হয় করবেন?
শ্রাবন্তী: হ্যাঁ, করব৷ নিশ্চয়ই করব৷ রাজীব আর আমার অনেক হিট ছবি আছে৷ আমি ওর পরিচালনায় অনেক ভাল ভাল কাজ করেছি৷ আমি আদ্যন্ত প্রফেশনাল৷ সিনেমা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই৷ আর জানেন তো আমি কৃষ্ণ ভক্ত৷ কৃষাণকেই সঙ্গে পেয়েছি! আর কোনও কিছুকেই ভয় পাই না৷ আর আছে আমার ছেলে ঝিনুক৷ আমার বেস্টফ্রেন্ড৷ যা সামনে আসবে ঠিক পেরিয়ে যাব৷
(সাক্ষাৎকার: শম্পালী মৌলিক)
The post আমি কৃষ্ণ ভক্ত, কৃষাণকেই সঙ্গে পেয়েছি: শ্রাবন্তী appeared first on Sangbad Pratidin.