সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে দিশাহারা যুবককে মুক্তির পথ দেখিয়েছিল সোশাল মিডিয়ায় এক বিজ্ঞাপন। যেখানে দাবি করা হয়, মৃত্যু পথযাত্রী ব্যক্তিকে বাঁচাতে কিডনি বিক্রি করলে মিলবে ৩০ লক্ষ টাকা। বিপুল ঋণের দায় থেকে বাঁচতে কিডনি বিক্রি করে বিপাকে পড়লেন অন্ধ্রপ্রদেশের ৩১ বছর বয়সি এক অটো চালক। ৩০ লক্ষের রফার মাত্র ৫০ হাজার পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন প্রতারিত যুবক।
জানা গিয়েছে, অনলাইন লোন অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন মধুবাবু। সেই ঋণ থেকে বাঁচতে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তাঁর বাড়িতে একজন এজেন্ট আসেন। বাশা নামের ওই এজেন্ট তাঁকে বোঝান কিডনি বিক্রি করলে ৩০ লক্ষ নগদ টাকা পাবেন যুবক। এমনকী বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে এক মহিলার সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাৎ করানোর হয়। ওই মহিলা মধুকে আশ্বস্ত করেন তিনি নিজেও কিডনি বিক্রি করেছেন এবং সঠিক সময়ে কথামতো টাকাও পেয়ে গিয়েছেন। কথার জালে ভুলে কিডনি বিক্রিতে রাজিও হয়ে যান মধুবাবু।
এর পর বিজয়ওয়াড়ার বিজয়া নামে এক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় ওই যুবকের। যাতে কণামাত্র সন্দেহের অবকাশ না থাকে তার জন্য অস্ত্রোপচারের আগে যার শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন হবে সেই রোগীর পরিবারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করানো হয় অটোচালকের। তাঁরা ৫০ হাজার টাকা যুবকের হাতে তুলে দিয়ে জানান, অস্ত্রোপচারের পর বাকি ২৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। তবে কিডনি নিয়ে নেওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী বাকি টাকা আর দেওয়া হয়নি যুবককে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে এর পর পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই যুবক।
[আরও পড়ুন: ‘হিন্দুত্ব নিয়ে বক্তব্য সম্পূর্ণ ঠিক’, রাহুল গান্ধীর পাশে শঙ্করাচার্য]
ওই যুবকের অভিযোগ, 'আমার আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে আমার সঙ্গে। তাঁরা কথার জালে জড়িয়ে আমায় বিশ্বাস করিয়েছিল একজন মৃত্যুপথযাত্রীকে প্রাণে বাঁচাতেই এই কিডনি নিচ্ছে তাঁরা। আমিও রাজি হয়েছিলাম এই ভেবে যে একজন মানুষ প্রাণে বাঁচবেন। আমি নিজেও ঋণমুক্ত হব ও আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। তবে পরে জানতে পারি গোটা বিষয়টা ভুয়ো। এমনকী রোগীর পরিবার বলে যাঁদের সঙ্গে আমাকে দেখা করানো হয় তারাও সাজানো।'
[আরও পড়ুন: এক বছরে দেশে নতুন কর্মসংস্থান ৪ কোটি ৭০ লক্ষ! রিপোর্টে দাবি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের]
এদিকে যে হাসপাতালে এত কাণ্ড সেই বেসরকারি হাসপাতালের দাবি, তারা কোনও বেআইনি কাজ করেননি। সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই ওই অস্ত্রোপচার হয়েছে। স্বেচ্ছায় কিডনি দান করতে রাজি হয়েছিলেন ওই যুবক। সেই মতো খাতায় কলমে রোগীর সম্মতি নিয়েই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।